Adsterra

লোড হচ্ছে...

ইসলামের আলোকে জ্ঞান ও নৈতিকতা

 

ইসলামের আলোকে জ্ঞান ও নৈতিকতা, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News

প্রতিবছর ৮ সেপ্টেম্বর পালিত হয় আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে সাক্ষরতা বা শিক্ষা মানুষের জীবনের একটি মৌলিক ও অপরিহার্য অংশ। মহান আল্লাহ কোরআনে প্রথমই হুকুম দিয়েছেন, ‘পড়ো তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক ১-২) এই আয়াত মানবজাতিকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, জ্ঞান অর্জন করা মানুষের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব। ইসলাম কেবল ধর্মীয় বা শাস্ত্রগত শিক্ষাকেই গুরুত্ব দেয়নি, বরং মানবিক, নৈতিক ও সামাজিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও জ্ঞান অর্জনকে অপরিহার্য করেছে।

ইসলামে সাক্ষরতা কেবল অক্ষর জ্ঞান বা লেখাপড়ায় সীমাবদ্ধ নয়। এটি জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তির বিকাশের প্রতীক। নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ ও নারীর জন্য ফরজ।’ (ইবনে মাজাহ) এ থেকে বোঝা যায়, ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য শিক্ষার সমান গুরুত্ব আরোপ করেছে। ইসলামের স্বর্ণযুগে শিক্ষিত নারী ও পুরুষ সমাজ, বিজ্ঞান, দর্শন ও সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এই উদাহরণ আমাদের দেখায়, শিক্ষা সমাজ ও জাতির অগ্রগতির এক শক্তিশালী হাতিয়ার।

সাক্ষরতার সামাজিক ও নৈতিক দিকও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষিত ব্যক্তি কেবল নিজেকে সমৃদ্ধ করে না, বরং সমাজের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। ইসলামে শিক্ষিত মানুষকে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, মানবিক মর্যাদা সংরক্ষণ এবং বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে।

শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি ও প্রকৃতিকে বোঝার ক্ষমতা অর্জন করে, নৈতিক দায়িত্ব সচেতনভাবে পালন করতে সক্ষম হয় এবং ধর্মীয় শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারে। এটি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে, অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করে এবং মানব কল্যাণে সহায়ক হয়।

আরও পড়ুন যেমন ছিল নবীজির মক্কিজীবন

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, শিক্ষা কেবল ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য নয়, বরং সমাজ, জাতি এবং মানবজাতির কল্যাণের জন্যও অপরিহার্য। প্রতিটি মুসলিমের কর্তব্য হলো নিজেকে শিক্ষিত করা এবং প্রাপ্ত জ্ঞানকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মানবকল্যাণে ব্যবহার করা। ইসলাম শিক্ষা অর্জনকে এক মহৎ দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করে, যা মানুষের নৈতিক, সামাজিক এবং আত্মিক বিকাশ নিশ্চিত করে।

২০২৫ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার প্রায় ৭৬.৮ শতাংশ। এর মানে, এখনো প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ নিরক্ষর। এই চ্যালেঞ্জ মুসলিম সমাজের কাছে শিক্ষার প্রসার ও উন্নত শিক্ষানীতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে আরও দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করে। ইসলামের শিক্ষার আদর্শ অনুসরণ করে শিক্ষা, সামাজিক সচেতনতা এবং নৈতিক মূল্যবোধের মাধ্যমে আমরা এই কমতি পূরণ করতে পারি।

No comments

Powered by Blogger.