Adsterra

লোড হচ্ছে...

গাজায় ১ হাজার মসজিদ ধ্বংস করেছে ইসরায়েল

 

গাজায় ১ হাজার মসজিদ ধ্বংস করেছে ইসরায়েল, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ভয়াবহতা শুধু যুদ্ধক্ষেত্র কিংবা সামরিক স্থাপনায় সীমাবদ্ধ নেই, বরং এর পরিধি ছড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনিদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থাপনাতেও। একদিকে নির্বিচারে বোমাবর্ষণে হাজারো বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছে, অন্যদিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে মসজিদ, গির্জা ও শতাব্দীর প্রাচীন উপাসনালয়। লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে ইমাম, আলেম ও ধর্মীয় প্রচারকদের, যারা কেবল ধর্মীয় নেতা নন, বরং সমাজের নৈতিক দিকনির্দেশক, ঐক্যের প্রতীক এবং জাতীয় চেতনার ধারক। তাদের হত্যা ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে একটি জাতির আত্মিক শক্তি, সাংস্কৃতিক স্মৃতি ও ইতিহাসকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী এসব কর্মকাণ্ড সরাসরি যুদ্ধাপরাধের শামিল হলেও ইসরায়েলের আগ্রাসন থামছে না, বরং দিন দিন আরও তীব্র হচ্ছে। ফলে গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করছে, আর বিশ্ব বিবেকের সামনে দাঁড়াচ্ছে বড় এক প্রশ্ন, কবে থামবে এ নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ?

গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান হামলায় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত ২৩৩ জন ইমাম ও ইসলামি ধর্মপ্রচারক নিহত হয়েছে। ৮২৮টি মসজিদ ধসিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ১৬৭টি মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার।

আরও পড়ুন যেমন ছিল নবীজির মক্কিজীবন

গাজার মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল-থাওয়াবতেহ আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই আক্রমণগুলো পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের ধর্মীয় পরিচয় ও জাতীয় ঐক্যকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ইমাম ও আলেমরা শুধু ধর্মীয় নেতা নন, তারা সমাজের দিকনির্দেশক, জাতীয় চেতনার ধারক এবং ঐক্যের প্রতীক। ইসরায়েল তাদের নির্মূল করে ফিলিস্তিনিদের আত্মিক শক্তিকেই ভেঙে দিতে চায়।’

এই হামলা থেকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও রেহাই পায়নি। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় তিনটি গির্জা ধ্বংস এবং ২১ জন খ্রিস্টান ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার মিডিয়া অফিস।

গাজার শতাব্দী প্রাচীন মসজিদ ও গির্জাগুলো ফিলিস্তিনিদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের জীবন্ত স্মারক। এসব স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে একটি জাতির অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যকার সেতুবন্ধ ছিন্ন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন আফ্রিদির সঙ্গে প্রেম নিয়ে যা বললেন দীঘি

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও রোম স্ট্যাটিউট অনুযায়ী ধর্মীয় স্থান, উপাসনালয় এবং ধর্মীয় নেতাদের ওপর ইচ্ছাকৃত হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল। যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের টানা আহ্বান এবং নিন্দার পরও ইসরায়েলের হামলা আরও তীব্রতর হচ্ছে, যার ফলে গাজায় মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর আকার ধারণ করছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ধরনের হামলার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত চালানোর আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এসব অপরাধের দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা যায়।

No comments

Powered by Blogger.