বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ গ্রাউন্ড হাব গড়তে চায় স্টারলিংক, অনুমোদনের জন্য বিটিআরসিতে চিঠি
ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক বাংলাদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করতে চায়। সিঙ্গাপুরকে এড়িয়ে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহার করে ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইন্টারনেট সেবা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত ১৩ আগস্ট বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-কে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে এই অনুমোদন চেয়েছে স্টারলিংক। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজীপুরের হাইটেক পার্কে ৮০টি এন্টেনা নিয়ে এই স্টেশন স্থাপন করা হবে, যা হবে স্টারলিংকের বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের একটি কেন্দ্রীয় সংযোগস্থল।
চিঠিতে স্টারলিংক জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের ‘পয়েন্ট অব প্রেজেন্স (PoP)’ বা ডেটা হাবকে সিঙ্গাপুর ও ওমানের গ্রাউন্ড হাবের সঙ্গে যুক্ত করতে আইপিএলসি (International Private Leased Circuit) এবং আনফিল্টারড আইপি ব্যবহারের অনুমতি চায়। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এই উদ্যোগ নেটওয়ার্কের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন সুমুদ ফ্লোটিলা আসলে কী? ঢাকা ভয়েস
স্টারলিংক বিটিআরসিকে আশ্বস্ত করেছে যে, এই সংযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্থানীয় গ্রাহকদের ডেটা বা ট্রাফিক কোনোভাবেই দেশের বাইরে যাবে না। দেশের সব ইন্টারনেট ট্র্যাফিক আগের মতোই অভ্যন্তরীণ ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (IGW) ব্যবহার করে পরিচালিত হবে, যেখানে নিরাপত্তা, আইনসম্মত তদারকি ও কনটেন্ট ফিল্টারিংয়ের নীতিমালা অপরিবর্তিত থাকবে।
বিটিআরসির ২৭ আগস্টের বৈঠকে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হলেও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, সিঙ্গাপুরের মাধ্যমে ট্রানজিট সেবা দেওয়া ব্যয়বহুল হওয়ায় স্টারলিংক বাংলাদেশকে এ অঞ্চলে ট্রানজিট ব্যবসার নতুন সুযোগ দিচ্ছে।
সংযোগ স্থাপনের জন্য স্টারলিংক সরকার অনুমোদিত স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ‘ফাইবার অ্যাট হোম’ ও ‘বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড’ (বিএসসিসিএল) থেকে আইপিএলসি সেবা নিতে চায়।
উল্লেখ্য, আইপিএলসি এমন এক আন্তর্জাতিক ডেটা সংযোগ ব্যবস্থা যা দুটি দেশকে সরাসরি যুক্ত করে। অপরদিকে, আনফিল্টারড আইপি ব্যবহারে ডেটা ব্লকিং বা স্থানীয় নিরাপত্তা তদারকি ছাড়াই আন্তর্জাতিক লিংকে ডেটা পাঠানো সম্ভব হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব জানান, “ভবিষ্যতে যেন সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই স্টারলিংককে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।”
অন্যদিকে, বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, দেশের আইন, নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
No comments