Adsterra

লোড হচ্ছে...

এআইয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে কি আমরা নিজেদের সম্পর্ক হারিয়ে ফেলছি?

  

এআইয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে কি আমরা নিজেদের সম্পর্ক হারিয়ে ফেলছি, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News

চাকরি থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনযাপন, আধুনিক জীবনে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। এটি এখন কেবল প্রযুক্তির দুনিয়ায় সীমাবদ্ধ নেই, ঢুকে পড়েছে আমাদের ব্যক্তিগত গণ্ডিতেও। একাকিত্বের সঙ্গী থেকে শুরু করে মন খারাপের রাতে এআই হয়ে উঠছে আমাদের সবার ‘ডিজিটাল বন্ধু’। এআই শুধু মুহূর্তেই জটিল সব সমস্যার সমাধান করে দেয় না, বরং ভালো বন্ধুর মতোই বাড়িয়ে দেয় অদৃশ্য ভার্চ্যুয়াল হাত। কিন্তু এই একাকিত্বের দিনে এআই কি হয়ে উঠছে আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু? মানবিক সম্পর্কগুলো কি আলগা হতে বসেছে?একটা সময় ছিল, যখন দুর্দিনে সঙ্গী হয়ে উঠতেন রক্ত–মাংসের মানব বন্ধুরা। নিজের একান্ত ব্যক্তিগত কথা বলার মানুষ ছিল বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের সদস্য। নিজের সব আবেগ-অনুভূতি ভাগাভাগি করে নেওয়া যেত তাঁদের কাছে। কিন্তু সময়টা এখন যেন বড্ড কঠিন। বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সময় কোথায়?প্রত্যেকে নিজেদের কাজে ব্যস্ত, অন্যের কথা শোনার জন্য সময় যেন কমে গেছে। আর তখনই হাতের মুঠোয় ধরা দিয়েছে এআই, যে শুধু মনোযোগ দিয়ে সব কথা শোনেই না, মুহূর্তেই বের করে দিতে পারে সমাধান। হোক সেটা জটিল কোনো গাণিতিক সমস্যা কিংবা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সব কাজের কাজি সে।এত দিন সবাই ধরে নিতেন, এআই বোধ হয় একটা কাঠখোট্টা চ্যাটবট বাদে আর কিছুই নয়। কিন্তু সেটা বদলে গেল যখন নিজের ব্যক্তিগত গল্প জুড়ে দিতে শুরু করলেন এআইয়ের কাছে। এআই শুধু মনোযোগ দিয়ে সে গল্প শুনলই না। বরং বুদ্ধিমান চ্যাটবটের মতো সে সমস্যার সমাধানও বের করে দিল।কিন্তু তখনই একটা প্রশ্ন উঁকি দিল মাথায়। এআইয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে কি আমরা নিজেদের সম্পর্ক হারিয়ে ফেলছি? অজান্তেই কি থমকে যাচ্ছে আমাদের আবেগ অনুভূতি আর ভালোবাসা?

কিন্তু এআই কেন

বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর: এআই চ্যাটবট এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে, যাতে সে বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর দিতে পারে। প্রতিটি সমস্যার সঠিক উত্তর দিতে পারাই এআইয়ের একমাত্র কাজ। আর সে কাজ করতে বিপুল পরিমাণ এনার্জিও খরচ হয়। আর যেহেতু এআইয়ের কাছে সব ধরনের তথ্য থাকেই, আর সেটা কাজে লাগিয়ে সে সাহায্য করছে ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানেও।

সহজলভ্যতা: এআই ব্যবহারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ সময়। সপ্তাহে ৭ দিন, দিনে ২৪ ঘণ্টা চাইলেই এআই থাকে হাতের মুঠোয়। যখন যা দরকার, সময়ে–অসময়ে তাকে পাওয়া যায়। ব্যক্তিজীবনে সবাইকে যেকোনো সময় চাইলেও পাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু এআইয়ের তো আর ঘুম, খাওয়া কিংবা ব্যক্তিগত কাজের প্রয়োজন হয় না। ফলে যখন দরকার হয় তখনই পাশে পাওয়ায় মনের কথা বলা হয়ে ওঠে সহজ।

ভুল–বোঝাবুঝির ঝুঁকি নেই: এআইয়ের কাছে মন খুলে কথা বলায় কোনো সামাজিক ঝুঁকি নেই। আপনার কথা ভুল বোঝা, আপনার আচার-আচরণকে বিচার করা কিংবা আপনার অনুভূতিকে পাত্তা না দেওয়ার মতো ঘটনা নেই বললেই চলে।

এআই ব্যবহারের সমস্যা  

যে কারণে খুব অল্প সময়েই এআই কথা বলার উপযুক্ত সঙ্গীতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তাই বলে এআই যে খুব ভালো সঙ্গী, তা–ও কিন্তু নয়। বরং এআই ভেঙে দিচ্ছে আপনার মানসিক শক্তি। কিন্তু কীভাবে?

অস্বস্তিকর দিকগুলো এড়িয়ে যাওয়া: এআই আপনাকে শুধু ভালো কথা বলে অনুপ্রাণিত করতে পারে। এককথায় সে আপনাকে কেবল ‘ভালো’ অনুভব করায়। কিন্তু আপনার ভুলগুলো ধরিয়ে দিতে সাহায্য করে না। ফলে কোনো সমস্যায় আপনার যদি ভুল থেকেও থাকে সেটা আর ধরা পড়ে না।

প্রকৃত সহানুভূতির অভাব: এআই যেভাবে সহানুভূতি প্রকাশ করে, সেটা কোনো মানুষের কাছ থেকে আসে না। যন্ত্র যেভাবে আপনাকে বুঝতে পেরেছে, সেভাবেই আপনাকে সান্ত্বনা দেয়। একজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা মানে শুধু নিজের আবেগ–অনুভূতি প্রকাশ করা নয়; যাঁর সঙ্গে কথা বলছেন, অর্থাৎ শ্রোতা তাঁর নিজের জীবন ও অভিজ্ঞতার আলোকে আপনাকে সাহায্যও করতে পারেন। যন্ত্র শুধু আপনার কথা অনুযায়ী আপনার করণীয় বলে দেয়। অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু বিচার-বিবেচনা করতে পারে না। কারণ, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রয়োজন হয় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনো পরামর্শ কিংবা উপদেশের।

আত্মনির্ভরশীলতা হ্রাস পাওয়া: নিজের আবেগ–অনুভূতির ব্যাপারে এআইকে প্রশ্ন করতে করতে নিজে নিজে সমস্যা সমাধানের পথ হারিয়ে ফেলেন অনেকে। ফলে ছোটখাটো সমস্যার জন্যও অনেকে এআইয়ের শরণাপন্ন হন।

তাই বলে কি এআই ব্যবহার করবেন না

না, তা কিন্তু নয়। বরং এআইকে ব্যবহার করুন আপনার প্রয়োজনমতো। যেকোনো তথ্য কিংবা আরও অনেক জটিল কাজের প্রয়োজনে অবশ্যই এআই ব্যবহার করুন। কিন্তু ব্যক্তিগত সমস্যা বলা কিংবা বোঝার জন্য এআই নয়, আসল মানুষের কাছে যান। কারণ, একজন ব্যক্তি তাঁর আবেগ-অনুভূতি দিয়ে আপনাকে যতটুকু বুঝবেন, এআই তা কখনোই বুঝতে পারবে না।

আরও পড়ুন জাপানি চায়ে বিশ্ব কেন মাতোয়ারা? 

ঢাকাভয়েস/এই

No comments

Powered by Blogger.