ঘামের দুর্গন্ধে আশেপাশের মানুষের জীবন অসম্মানীয়! দূর করবে ঘরোয়া ৫টি কার্যকরী উপায়
১) বেকিং সোডা
বেকিং সোডা প্রাকৃতিক ডিওডোরাইজার হিসেবে কাজ করে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেয় এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে। আন্ডারআর্ম বা পায়ে সামান্য বেকিং সোডা ট্যালকম পাউডারের মতো ছিটিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে দুর্গন্ধ কমে যায়। চাইলে ১ কাপ পানিতে ১ চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে স্প্রে হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।Journal of Chemical Education-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেকিং সোডার ক্ষারীয় গুণ ব্যাকটেরিয়ার টিকে থাকার পরিবেশ নষ্ট করে, যার ফলে দুর্গন্ধ কমে।
২) লেবু
লেবুর অম্লীয় (acidic) প্রকৃতি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসে সহায়তা করে। অর্ধেক লেবুর রস পানি মিশিয়ে তুলোর সাহায্যে আন্ডারআর্মে লাগালে তা প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে। এছাড়া কর্নস্টার্চের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে হাতে-পায়ে বা আন্ডারআর্মে লাগানো যায়। প্রয়োগের পর ১০ মিনিট রেখে গোসল করলে দীর্ঘসময় সতেজ থাকা যায়।International Journal of Food Science and Nutrition-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, লেবুর রসে থাকা সাইট্রিক এসিড ত্বকের ক্ষতিকর জীবাণুর কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।
৩) টমেটো
টমেটোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দুই থেকে তিনটি টমেটোর রস এক বালতি পানিতে মিশিয়ে গোসল করলে শরীর থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়। হাত-পা থেকেও যদি দুর্গন্ধ হয়, তবে এই পানিতে ২০–৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখা যেতে পারে।গবেষণায় দেখা গেছে, টমেটোর লাইকোপেন নামক উপাদান অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৪) ভিনেগার
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার বা সাদা ভিনেগার শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে কার্যকর। একটি তুলোর প্যাডে ভিনেগার নিয়ে ঘামযুক্ত স্থানে লাগালে এটি ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা করে এবং দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবাণুকে ধ্বংস করে।Journal of Clinical Microbiology-এর তথ্য অনুযায়ী, ভিনেগারের অম্লীয় গুণ (acidity) ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়।
৫) গ্রিন টি
গ্রিন-টিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। পানিতে গ্রিন-টির পাতা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন, তারপর তুলোর বল ভিজিয়ে শরীরের ঘামযুক্ত স্থানে লাগান। এটি ঘামের দুর্গন্ধ কমিয়ে সতেজ রাখে।একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে গ্রিন-টির পলিফেনল (polyphenol) যৌগ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বাধা দেয় এবং ত্বককে সুরক্ষা দেয়।দেহের দুর্গন্ধ কোনো রোগ নয়, তবে এটি সামাজিক ও মানসিক অস্বস্তি তৈরি করে। ডিওডোরেন্টের রাসায়নিক নির্ভরতার পরিবর্তে এ ধরনের প্রাকৃতিক উপায় নিয়মিত প্রয়োগ করলে শুধু দুর্গন্ধই দূর হবে না, বরং ত্বকেরও কোনো ক্ষতি হবে না। তবে সমস্যা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন জাপানি চায়ে বিশ্ব কেন মাতোয়ারা?
ঢাকাভয়েস/এই
No comments