Adsterra

লোড হচ্ছে...

ঘরে ফিরছে গাজাবাসী, বের হচ্ছে লাশ

গাজা, ফিলিস্তিন, ইসরায়েল, হামাস, যুদ্ধবিরতি, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, আল শিফা হাসপাতাল, জাতিসংঘ, কাতার, মিসর, ত্রাণ কার্যক্রম, ফিলিস্তিনি এনজিও, আন্তর্জা


ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর ঘরে ফিরতে শুরু করেছে গাজাবাসী। গতকাল শুক্রবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক ভিডিওতে দেখা যায়, গাজার সৈকতে আছড়ে পড়ছে ভূমধ্যসাগরের ঢেউ আর পাশের সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে গাজা শহর এবং উত্তর গাজার দিকে যাচ্ছে তারা।

এদিকে ইসরায়েলের হামলা বন্ধের পর বিভিন্ন স্থান থেকে লাশ উদ্ধার করা শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলি বাহিনী পিছু হটার সঙ্গে সঙ্গে এমন লাশ উদ্ধারের ঘটনা দিন দিন আরও বাড়বে।

গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি সই হয়। এরপর গতকাল শুক্রবার যুদ্ধবিরতি অনুমোদন দেয় ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক্সে এক পোস্টে জানান, ‘সরকার এইমাত্র জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে চুক্তির কাঠামো অনুমোদন করেছে।’ যুদ্ধবিরতির চুক্তি ঘোষণার পর ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের অবসানে একে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

নেতানিয়াহুর এমন ঘোষণার পর ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে তারা পেছনের দিকে সরে যাচ্ছে। শর্ত মেনে ওই এলাকা ফাঁকা করতে গতকাল পুরো রাত লেগে যেতে পারে। এ সময় ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলি বাহিনীর খুব কাছে না যেতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এদিকে নেতানিয়াহু যখন যুদ্ধবিরতি নিয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন, তখনো ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালাচ্ছিল। এসব হামলায় গতকাল থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জন নিহত এবং ৭১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ৬৭ হাজার ২১১ জন নিহত এবং ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৬১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেল।

এদিকে গতকাল হামলা বন্ধ হওয়ার পর গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে শহরের দিকে মানুষের ঢল নামে। মূলত সমুদ্রতীরের রাস্তা দিয়ে হাজারো মানুষকে হাঁটতে দেখা যায়। এ ছাড়া ধ্বংসস্তূপের মাঝের রাস্তা দিয়েও হাঁটতে দেখা যায় অনেক পরিবারকে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বিভিন্ন স্থান থেকে সরে যাওয়ার পর উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া জানান, গতকাল গাজা শহর থেকে ৩৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর অনেক চেনা সম্ভব হয়নি।


ত্রাণ তৎপরতা শুরু হচ্ছে

যেসব ফিলিস্তিনি যুদ্ধবিরতির পর ঘরে ফিরছেন, তাঁদের অধিকাংশই নিঃস্ব। ফলে এই মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে উদ্যোগী হচ্ছে প্যালেস্টিনিয়ান এনজিও নেটওয়ার্ক। তারা জানিয়েছে, অনেক ফিলিস্তিনি জানান তাঁদের ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, তবুও তাঁরা নিজভূমে ফিরছেন। এটা হলো ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার। তাঁরা এই অধিকার প্রয়োগ করছেন। যদিও গাজা শহরের পরিস্থিতি নাজুক, তার পরও সব ফিলিস্তিনি যাতে নিজ বাড়িতে ফেরার বিষয়ে আগ্রহী হন, সে বিষয় উৎসাহিত করা হচ্ছে।

এদিকে আইডিএফ যেসব এলাকা থেকে সরে যাচ্ছে, সেসব এলাকায় ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব নিচ্ছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া জাতিসংঘকে এই ত্রাণ কার্যক্রমে মার্কিন বাহিনী সাহায্য করবে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের সাবেক এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, তিনি আশা করছেন গাজায় যে ত্রাণ সহযোগিতা কার্যক্রম চলবে, তা পরিবহনে সহায়তা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি থাকবে। তবে তারা গাজায় প্রবেশ করবে না।

এদিকে গাজায় ত্রাণ তৎপরতা শুরু করতে বিভিন্ন দেশ এগিয়ে এসেছে। কাতার বলছে, তারা এ কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চায়। এ ছাড়া গাজার ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে একটি সম্মেলন আয়োজন করতে চাইছে জার্মানি। এ ছাড়া মিসরের সহায়তা গাজা পুনর্গঠনের উদ্যোগও নিতে চায় তারা।


তালিকা নিয়ে সংশয়

যে শর্তে যুদ্ধবিরতি হয়েছে, সে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল। শর্ত মেনে গতকাল বন্দীদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে তারা। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের কারাগারে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মুক্তি দেওয়ার জন্য ২৫০ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে হামাস যাঁদের মুক্তি চেয়েছে, এমন অনেকেরই নাম নেই সে তালিকায়।

এ তালিকা প্রকাশের পর এখনো হামাস কোনো মন্তব্য করেনি। তারা এই তালিকা মনে নেবে কি না, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। 


ঢাকা ভয়েস /এসএস


No comments

Powered by Blogger.