যেসব খাবার একসাথে খাওয়া উচিত না
চায়ে ডুবিয়ে বিস্কুট কিংবা ভাত দিয়ে মুরগির তরকারি- মিলিয়ে খাওয়ার ক্ষেত্রে এগুলো স্বাভাবিক খাবার। তবে খাবারের সব জুটিই যে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তা নয়। অনেক জনপ্রিয় খাবারের সমন্বয় শরীরে প্রভাব ফেলে উল্টোভাবে। কিছু খাবারের যৌগ আসলে শরীরের ভিটামিন ও খনিজ শোষণ প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়। আবার কিছু জুটি শরীরে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান জমিয়ে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। খাবারের মধ্যে ভালো-মন্দ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করার প্রয়োজন নেই, বরং সচেতন হতে হবে কোন খাবারগুলো একসঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়।
দুধ ও লেবুজাতীয় ফল
দুধের সঙ্গে কমলা বা লেবু খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। লেবুজাতীয় ফলে থাকে সিট্রিক অ্যাসিড, যা দুধের প্রোটিনকে জমাট বাঁধিয়ে দেয়। এতে দুধ হজমে সমস্যা হয়, গ্যাস, পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যারা ল্যাক্টোজ অসহিষ্ণু, তাদের জন্য এটি আরও বিপজ্জনক।
ডার্ক চকলেট ও দুধ
ডার্ক চকোলেটের নাম শুনলেই মনে পড়ে এর হৃদপিণ্ডবান্ধব উপকারিতা। যখন ডার্ক চকোলেটের সঙ্গে দুধ খাওয়া হয়, তখন দুধের প্রোটিন শরীরকে চকলেটের ফ্লাভোনয়েডস শোষণ করতে বাধা দেয়। ফলে চকলেটের আসল উপকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। হৃদযন্ত্র সুরক্ষায় ডার্ক চকোলেটের যে ভূমিকা রয়েছে, তা আর কার্যকর হয় না। তাই যারা চকোলেট ভালোবাসেন, তারা দুধ ছাড়া আলাদা করে খেলে তবেই এর স্বাস্থ্যগত উপকার পাবেন।
কফি ও কলা
সকালের নাশতায় অনেকেই তাড়াহুড়ো করে কফির সঙ্গে কলা খেয়ে থাকেন। তবে এটি শরীরের জন্য ভালো নয়। ক্যাফিন এবং দ্রুত হজমযোগ্য কার্বোহাইড্রেইট একসঙ্গে খেলে প্রথমে শরীরে শক্তি আসে। তবে অল্প সময় পরই রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গিয়ে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ফলে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয় এবং ক্লান্তি দ্রুত ফিরে আসে। তাই সকাল শুরু করা উচিত পানি এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার দিয়ে, এরপর কফি নেওয়া যেতে পারে।
ইন্সট্যান্ট নুডলস ও সয়া সস
দ্রুত তৈরি করা যায় বলে নুডলস অনেকের কাছে প্রিয়। আবার এর সঙ্গে সয়া সস যোগ করলে স্বাদ বেড়ে যায়। তবে অ্যাভেরি জেনকার সতর্ক করেছেন, “ইনস্ট্যান্ট নুডলসের সঙ্গে সয়া সস খেলে শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়াম জমে যায়। এতে প্রতিদিনের সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা কয়েক হাজার মিলিগ্রামে পৌঁছে যেতে পারে, যা হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।” অতিরিক্ত লবণ খাওয়া শুধু হৃদরোগই নয়, শরীরকে পানিশূন্য করে ফেলে। ফলে মাথাব্যথা, মাথা-ঘোরা ও দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে।
পিনাট বাটার ও রাইস কেক
রাইস কেকের ওপর পিনাট বাটার মেখে খাওয়া অনেকের কাছে দারুণ লাগে। এই জুটি শরীরে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি জোগায় না। কারণ রাইস কেক’য়ে জটিল শর্করা ও আঁশের অভাব রয়েছে। এতে করে শরীর দ্রুত শক্তি পেলেও তা মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় এবং আবারও ক্ষুধা পেয়ে বসে। ব্যস্ত দিনে এই ধরনের খাবার শরীরে শক্তি ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, বরং অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা তৈরি করে। রাইস কেক ছাড়া চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি যে কোনো দেশীয় পিঠার সাথেও পিনাট বাটার খাওয়া উপকারী হবে না।
No comments