Adsterra

লোড হচ্ছে...

নেপালে ফুটবল দলসহ চার শতাধিক বাংলাদেশি আটকা

নেপালে ফুটবল দলসহ চার শতাধিক বাংলাদেশি আটকা,ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news,bangladesh

জেন-জি আন্দোলনে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশটির সরকার পতন হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে কোনো সরকার নেই। এ অবস্থায় নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে এমন শঙ্কাও রয়েছে। দেশটিতে আটকা পড়েছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল, মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের প্রতিনিধিসহ অনেক বাংলাদেশি পর্যটক। এ ছাড়া নেপালে আনুমানিক চার শতাধিক বাংলাদেশি ঝুঁকিতে আছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করায় অবতরণের অনুমতি না পেয়ে ফেরত এসেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশটিতে অবস্থানরত সব বাংলাদেশিকে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিয়েছে ঢাকা।

গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, নেপালে থাকা সব বাংলাদেশিকে নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দেশটিতে ঘোরাফেরা না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বাংলাদেশিদের +৯৭৭৯৮০৩৮৭২৭৫৯ অথবা +৯৭৭৯৮৫১১২৮৩৮১ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

বর্তমানে ৩৬ সদস্যের জাতীয় ফুটবল দল ও মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের ৫১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিদেশে শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে নেপালের কাঠমান্ডুতে অবস্থান করছে। তাদের দৈনিক কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস স্থানীয় সমন্বয়কারীর মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে।

নেপালে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসও বসবাসকারী ও আটকে পড়া সব বাংলাদেশিকে বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সেখানে অবস্থানরত সব বাংলাদেশি নাগরিককে তাদের অবস্থানকৃত স্থানে বা হোটেলে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। আর ভ্রমণে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের আপাতত নেপাল ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে দূতাবাস।

নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, ফুটবল দল ও ডিফেন্স কলেজের প্রতিনিধির বাইরে নেপালে বর্তমানে আনুমানিক ৪০০ বাংলাদেশি পর্যটক রয়েছেন বলে তাদের ধারণা। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিওতে কর্মরত বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ৫০-এর বেশি হবে না। সকালে দূতাবাসের কর্মকর্তারা একটি গাড়ি নিয়ে উদ্ধার অভিযানে বের হন। তবে তা বিক্ষোভকারীরা ভেঙে দিয়েছে।

দূতাবাসের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিশনের নিরাপত্তা খুব একটা জোরদার নয়। মাত্র চার-পাঁচটি পুলিশ দিয়ে এটিকে সুরক্ষিত রাখা হয়। আর বর্তমানে দেশটিতে কোনো সরকার নেই। ফলে পুরো নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ফোনে পরামর্শ দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় আমাদের নেই।

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে ঢাকা

নেপালের সরকার পতন, আন্দোলনসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি দেশটিতে সাম্প্রতিক মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, নেপালে চলমান সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় বাংলাদেশ গভীর শোক প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে। বাংলাদেশ আশা করে, সব পক্ষ সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করবে এবং যে কোনো মতপার্থক্য শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে। দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, নেপালের জনগণ শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।

অবতরণ না করে ফেরত এলো বিমান

নেপাল আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে। ফলে কাঠমান্ডুতে অবতরণের অনুমতি না পেয়ে গতকাল বিকেলে ১১৪ যাত্রীসহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকায় ফিরে এসেছে। এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা রওশন কবীর সমকালকে জানান, নেপালের ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সেখানকার স্থানীয় সময় রাত ১২টা পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে ফ্লাইট অবতরণের অনুমতি না থাকায় পাইলট ফের ঢাকায় অবতরণ করেন। যাত্রীদের বিমানের তালিকাভুক্ত হোটেলে রাখা হয়।

বিমানটি নির্ধারিত সময় অনুসারে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করে এবং স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় কাঠমান্ডুতে অবতরণের কথা ছিল। অবতরণের অনুমতি না পেয়ে কাঠমান্ডুর আকাশসীমায় প্রায় ৫৫ মিনিট ঘোরাঘুরির পর ফ্লাইটটি অবশেষে ঢাকায় ফিরে আসে। বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে। কাঠমান্ডুতে আটকে পড়া ৯৪ যাত্রীর হোটেলের ব্যবস্থা করেছে বিমান।

ফুটবল দলকে আনার চেষ্টা চলছে : প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর

নেপালে আটকে পড়া ফুটবল দলকে নিরাপদে দেশে আনতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। গতকাল রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে ফুটবল দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা টিম হোটেলে অবস্থান করছেন। নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

নিরাপত্তা এবং নির্বিঘ্নে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও টিম ম্যানেজার আমের খানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.