ঢাকা মেডিকেলে যেভাবে চিকিৎসা হলো
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনার পর ওসমান হাদির অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটাপন্ন। শুক্রবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তার (হাদি) অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।
দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। শকে চলে যাওয়ায় দ্রুত সিপিআর দেওয়ার পর সাময়িকভাবে রক্তচাপ কিছুটা স্থিতিশীল হয়। এরপরও পরিস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুতর বলে বর্ণনা করেছেন চিকিৎসকেরা বলেন, ওসমান হাদিকে আইসিইউতে ভর্তি করে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো তার চিকিৎসায় সব ধরণের জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাৎক্ষণিক তার অপারেশন কার্যক্রম চালানোর জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়। তার রক্তের গ্রুপ বি নেগেটিভ। রক্ত সংকটের কারণে তাৎক্ষণিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বি নেগেটিভ রক্ত ব্যবস্থা করে দেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ বলেন, ওসমান হাদিকে যখন জরুরি বিভাগে আনার পর তার অবস্থা ছিল খুবই আশঙ্কাজনক। পরে তাকে সিপিআর দেওয় হয়।
লাইফ সাপোর্টে হাদি
হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তার মাথায় প্রবেশ করা গুলি বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিকে বের হয়ে গেছে। যা গুরুতর মস্তিষ্ক আঘাতের কারণ হয়েছে। মাথার খুলি খুলে রাখা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সামনে চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। এসময় হাসপাতালে পরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ঢামেক নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢামেক নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জাহিদ রাহান বলেন, ‘গুলিটি মাথার ভেতর দিয়ে ক্রস করে গেছে। এতে ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি হয়েছে এবং ব্রেইন স্টেমেও আঘাত লেগেছে। বর্তমানে তাকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। জীবনের ন্যূনতম চিহ্ন এখনো আছে, তিনি পুরোপুরি নিস্তেজ হয়ে যাননি। তবে অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। আমরা নিশ্চয়তা নিয়ে কিছু বলতে পারছি না।’
আরও পড়ুন যেভাবে আলোচনায় আসেন ওসমান হাদি
তিনি আরও জানান, বাম দিকে যেখানে গুলিটি বের হয়েছে, সেই অংশের খুলির হাড় অপসারণ করে মস্তিষ্কের চাপ কমানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাথার ভেতরের রক্ত ও জমে থাকা ফ্লুইড অপসারণ করা হয়েছে।
এসময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী মোহাম্মদ সাইদুর রহমান জানান, ‘হাদিকে যখন ঢামেকে আনা হয়, তার জিসি স্কোর ছিল মাত্র তিন। পরে তিনি একবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে যান। তার মস্তিষ্কে চাপ বেড়ে যাওয়ায় ডিকমপ্রেশন ও ক্রেনিওটমি করা হয়। তবে অবস্থার দ্রুত ওঠানামার কারণে তাকে স্টেবল রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।’
তিনি বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই অবস্থায় কোনো সুস্পষ্ট চিকিৎসা সিদ্ধান্ত দেওয়া বা আশার কথা বলা সম্ভব নয়।


No comments