Adsterra

লোড হচ্ছে...

আইনি পথেই নিষিদ্ধ হতে পারে আওয়ামী লীগ


আইনি পথেই নিষিদ্ধ হতে পারে আওয়ামী লীগ,  ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটি নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকায় ব্যাপক বিক্ষোভের জেরে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এবার দল হিসেবেই আওয়ামী লীগের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। সরকারের নীতিনির্ধারকেরা ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন।তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি ফিফার মতোই এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তাও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা ট্রাইব্যুনালে জমা দেবে প্রসিকিউশন। প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, “চার ধরনের শাস্তির মধ্যে একটি হলো দল নিষিদ্ধ করা। অপরাধ প্রমাণিত হলে ট্রাইব্যুনাল দল নিষিদ্ধ করতে পারেন। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তারা (আওয়ামী লীগ) মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে।” তামিম আরও জানান, শেখ হাসিনা নিজে বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ ও দলীয় নেতাদের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন, যা প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

আইনি ভিত্তি ও সংশোধিত ধারা

মানবতাবিরোধী অপরাধে দল হিসেবে বিচার সম্ভব করতে ২০২৪ সালের ১০ মে সংশোধিত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। এর ২০বি ধারায় বলা হয়েছে — যদি কোনো সংগঠন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন, আদেশ, প্ররোচনা বা সহায়তা করে থাকে, তাহলে ট্রাইব্যুনাল সেই সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত, নিষিদ্ধ বা নিবন্ধন বাতিল করতে এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।

চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিবেদন পাওয়া মাত্র পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” এর আগে চলতি বছরের ১২ মে, অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে।

অতীত অভিযোগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন

সরকারি প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনগুলো রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর গুম, খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দলও জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিচারবহির্ভূত হত্যা, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটেছে।

আইনি মতামত ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, “ঘটনার সময় যদি কোনো আইন অনুযায়ী অপরাধ না হয়, পরবর্তীতে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায় না। এটি সংবিধানের ৩৫(১) অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা আছে।” অন্যদিকে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “আওয়ামী লীগ যে অপরাধ করেছে, তার বিচার হওয়া সময়ের দাবি। রাষ্ট্র এখন সঠিক পথে এগোচ্ছে।”

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আরও জানান, “বিভিন্ন সাক্ষ্য ও জবানবন্দিতে আওয়ামী লীগের দলীয় সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। প্রয়োজনে ১৪ দলীয় জোটের অন্যান্য দলগুলোর বিরুদ্ধেও তদন্ত হতে পারে।”

আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “শেখ হাসিনা রাজনৈতিকভাবে জনগণের বিরুদ্ধে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনা সময়ের দাবি।”

No comments

Powered by Blogger.