Adsterra

লোড হচ্ছে...

চ্যাটজিপিটিকে যেসব তথ্য দিলে বিপদে পড়তে পারেন

চ্যাটজিপিটি, এআই চ্যাটবট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অনলাইন নিরাপত্তা, ডেটা প্রাইভেসি, সাইবার নিরাপত্তা, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা, এআই ঝুঁকি, গোপনীয়তা রক্ষা,

কোনো এআই চ্যাটবটের সঙ্গে বিনিময় করা তথ্য আদতে গোপন থাকবে না। আপনি যা জানাচ্ছেন, সেসব তথ্য সংরক্ষণ করা হতে পারে, বিশ্লেষণ করা হতে পারে, এমনকি ভবিষ্যতে ফাঁসও হয়ে যেতে পারে। ফলে, কিছু বিষয় কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়।

চ্যাটজিপিটি বা এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবটের ব্যবহার এখন দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। মেইল ড্রাফট করা থেকে শুরু করে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বা মাঝে মাঝে একাকিত্বে সঙ্গ দেওয়ার মতো কাজেও মানুষ এখন চ্যাটবটের ওপর নির্ভর করছেন।

মানুষের মতো করে উত্তর দেওয়ার ক্ষমতার কারণে অনেকেই এগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য বলেই ভাবেন। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বিপদের ঝুঁকি।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন এমন ১০টি বিষয় তুলে ধরা হলো, যা কখনোই চ্যাটবটের সঙ্গে শেয়ার করবেন না।

১. ব্যক্তিগত তথ্য

আপনার পুরো নাম, বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর কিংবা ই-মেইল; এগুলো আলাদা আলাদাভাবে নিরীহ মনে হলেও একসঙ্গে করলে এসব দিয়ে আপনার অনলাইন পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব। এই তথ্য ফাঁস হলে আপনি প্রতারণা, ফিশিং আক্রমণ বা এমনকি শারীরিক ট্র্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এআই চ্যাটবট গোপনীয়তার নিশ্চয়তা দেয় না, তাই ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা উচিত।

২. আর্থিক তথ্য

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সামাজিকনিরাপত্তা নম্বরের মতো তথ্য সাইবার অপরাধীদের কাছে মূল্যবান। চ্যাটবটে এসব তথ্য দিলে তা চুরি বা অপব্যবহারের শিকার হতে পারে।

৩. পাসওয়ার্ড

কোনো চ্যাটবটের সঙ্গেই আপনার পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন না, কোনোভাবেই নয়। এটি আপনার ই-মেইল, ব্যাংক বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে। পাসওয়ার্ড সংরক্ষণের জন্য শক্তিশালী ও নিরাপদ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো।

৪. গোপন তথ্য বা কোনো স্বীকারোক্তি

অনেকেই একাকিত্বে চ্যাটবটকে মন খুলে বলার চেষ্টা করেন। তবে এআই কোনো বন্ধু বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নয়। আপনি যা বলছেন, তা সংরক্ষিত হতে পারে, পরবর্তীতে প্রশিক্ষণে ব্যবহার হতে পারে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসও হতে পারে। সুতরাং, গোপন কিছু জানাতে চ্যাটবট নয়, বেছে নিন উপযুক্ত বন্ধু বা পরিচিতজনকে।

৫. স্বাস্থ্য বা চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য

চ্যাটবটের মাধ্যমে চিকিৎসা বিষয়ক তথ্য জানতে চাওয়া অনেকের অভ্যাস। তবে এআই চিকিৎসক নয়, ভুল তথ্য দিতে পারে। এমনকি আপনার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য যেমন প্রেসক্রিপশন, চিকিৎসার ইতিহাস বা বিমার তথ্য শেয়ার করলে তা চুরি হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৬. অশ্লীল বা আপত্তিকর বিষয়বস্তু

অনেক চ্যাটবট আপত্তিকর বা অবৈধ বিষয়বস্তু শনাক্ত করে ব্লক করলেও, আপনি যা লিখছেন তা রেকর্ড হয়ে যেতে পারে। যৌন বা অবমাননাকর আলাপ, বেআইনি তথ্য; এসবের কারণে আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়ার আশঙ্কাও থাকে।

৭. কর্মস্থলের গোপনীয় তথ্য

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন কর্মীদের সতর্ক করছে, তারা যেন কোনোভাবেই ব্যবসায়িক গোপন তথ্য, নথিপত্র বা কৌশল চ্যাটবটে পোস্ট না করেন। অনেক এআই চ্যাটবট ইনপুট ব্যবহার করে নিজেকে আরও উন্নত করে। ফলে আপনার শেয়ার করা তথ্য বাইরে চলে যেতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

৮. আইনি জটিলতা বা মামলা

চুক্তি, মামলা-মোকদ্দমা বা আইনি বিবাদের মতো বিষয়ে চ্যাটবটের পরামর্শ নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। চ্যাটবট কখনোই একজন আইনজীবীর বিকল্প নয়, ফলে ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিতে পারে। আপনি যেসব তথ্য শেয়ার করছেন, সেগুলো ভবিষ্যতে আইনি সমস্যা তৈরি করতে পারে।

৯. সংবেদনশীল ছবি বা নথি

পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা ব্যক্তিগত ছবি চ্যাটবটে আপলোড করা থেকে বিরত থাকুন। আপনি ডিলিট করলেও অনেক সময় সেই ফাইলের ডিজিটাল চিহ্ন থেকে যায়। এই ধরনের তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে এবং বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

১০. যা আপনি অনলাইনে দেখতে চান না

যদি আপনি না চান যেকোনো কিছু ভবিষ্যতে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ুক, তাহলে সে তথ্য, ছবি বা কনটেন্ট চ্যাটবটকে দেবেন না। চ্যাটবটের আলাপ অনেক সময় গোপন থাকে না, এমনকি ভবিষ্যতেও ব্যবহার হতে পারে। তাই এআই চ্যাটবটের সঙ্গে বিনিময় করা তথ্যের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।


 ঢাকা ভয়েস /এসএস


No comments

Powered by Blogger.