Adsterra

লোড হচ্ছে...

কিশোর অপরাধ মোকাবেলায় কার্যকর উপায়


কিশোর অপরাধ মোকাবেলায় কার্যকর উপায়,ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News

সারা দেশে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে কিশোররা। একে অপরকে ক্ষমতা প্রদর্শন করতে কয়েকজন কিশোর মিলে পাড়া বা মহল্লায় বিভিন্ন নামে গড়ে তুলছে বিশেষ বাহিনী। সাধারণত নিজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, মাদক, প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে বিরোধের কারণে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। এসব কিশোর এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন, ধর্ষণ, মারামারি, মাদক ব্যবসা, জমি দখলে সহায়তা, ইন্টারনেট সংযোগ, নারীদের উত্ত্যক্ত, যৌন হয়রানি, হামলা, মারধরসহ ভয়ংকর সব অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।এসব কর্মকাণ্ড সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, অপরাধ কর্মকাণ্ডের অনুকরণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, রাজনীতিবিদদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার ফলে এসব গ্যাং দিন দিন ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে।

মা-বাবা ও পরিবারের করণীয়

মা-বাবার আচার-আচরণ সন্তানের ওপর ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই দায়িত্ব সচেতন মা-বাবার কর্তব্য হলো শৈশব থেকেই সন্তানকে ধর্মীয় অনুশাসনে গড়ে তোলা।ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। বিপথগামী সন্তানকে রক্ষা করা পরিবারের দায়িত্ব। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা নিজেদের ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন থেকে বাঁচাও, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর; যেখানে আছেন কঠোর ফেরেশতাকুল, আল্লাহ তাদের যে নির্দেশ দিয়েছেন তারা সে ব্যাপারে তার অবাধ্য হয় না। আর তারা তা-ই করে, যা তাদের আদেশ করা হয়।

শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের করণীয়

কিশোর অপরাধ দমনে শিক্ষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। কারণ শিক্ষার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন। তাই প্রাতিষ্ঠানিক পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উত্তম চরিত্র ও সামাজিক শিষ্টাচার অনুশীলনে শিক্ষকদের ভূমিকা থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ বৃদ্ধিতে ধর্ম শিক্ষার বিল্প নেই। আর এ জন্য শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ রক্ষায় ধর্ম শিক্ষার বইকে প্রায়োগিক রূপ দিতে হবে।

সমাজ ও রাষ্ট্রের করণীয়

কিশোর অপরাধ একটি প্রকট সামাজিক সংকট। এই সংকট দূরীকরণে সমন্বিতভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। সমাজের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ব্যক্তিদের এর উত্তরণে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। মসজিদভিত্তিক সামাজিক দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে ইমাম-খতিবদের সঙ্গে পরামর্শ করে অপরাধীদের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি চর্চার কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সহায়তায় সমাজ নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিতে পারেন।

আইন-শৃঙ্খলা ও মিডিয়া

সামাজিক যোগাযোগের দোহাই দিয়ে যারা অসামাজিক কার্যক্রমে জড়িত, তাদের ওপর কঠোর নজরদারি এখন সময়ের দাবি, বিশেষ করে ফেসবুকের অপব্যবহার করে এসব চক্র যেসব অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে তা ঠেকাতে হলে কঠোর প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দরকার। এ ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী বড় ভূমিকা রাখতে পারে। জনগণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও দৃষ্টি আকর্ষণ করাটাই অনেক কিশোর গ্যাং বা সন্ত্রাসীদের কাছে মুখ্য।গণমাধ্যমের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে জনগণকে জানানো। এটা সামাজিক দায়িত্ব বা দায়বদ্ধতা।

আইন ও সংশোধন কেন্দ্র

আরেকটি বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে, তা হচ্ছে কিশোর সংশোধন কেন্দ্র। প্রচলিত আইনে ১৮ বছরের নিচে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তাদের বড় কোনো শাস্তির পরিবর্তে পাঠানো হচ্ছে কিশোর সংশোধনাগারে। যেসব কিশোরের সংশোধনাগারে নেওয়া হচ্ছে, তাদের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা নেই, একজন কিশোর সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে এসে যদি আবার খারাপ অপরাধে জড়িয়েই পড়ে, তবে তা আমাদের জন্য চরম ব্যর্থতা। প্রয়োজনে আইন সংস্কার এবং কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা—এ দুই বিষয় নিয়েও আমাদের ভাবার অবকাশ থেকে যায়। কিশোর অপরাধ দমনে যার যার অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো অন্যায় (অপকর্ম) হতে দেখে, সে যেন সম্ভব হলে তা হাত দ্বারা রুখে দেয়। আর এটা সম্ভব না হলে প্রতিবাদী ভাষা দিয়ে তা প্রতিহত করে। আর তা-ও না পারলে সে যেন ওই অপকর্মকে হৃদয় দ্বারা বন্ধ করার পরিকল্পনা করে (মনে মনে ঘৃণা করে), এটি দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক।’

 আরও পড়ুন ট্রাম্পের চোখে নেতানিয়াহু ‘বোঝা’ হয়ে উঠছেন — ইসরায়েলি বিশ্লেষকের মন্তব্য 

ঢাকা ভয়েস/এই


No comments

Powered by Blogger.