দ্রুত ওজন কমাতে কত গতিতে হাঁটা উচিত
তাহলে কি তাতেই ওজন কমে যাওয়ার কথা নয়?
যদিও যেকোনো ধরনের নড়াচড়া শরীরের জন্য উপকারী, তবে ওজন কমাতে হলে হাঁটতে হবে দ্রুত। কিন্তু প্রশ্ন হলো—ঠিক কত দ্রুত হাঁটতে হবে? চলুন, তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
হাঁটার গতি ও ওজন কমানো
ওজন কমাতে হাঁটা সহায়ক, তবে হাঁটার গতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ক্যালরি খরচ সরাসরি গতি বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ে।উদাহরণস্বরূপ, ১৫৫ পাউন্ড ওজনের একজন মানুষ যদি ঘণ্টা প্রতি ২ মাইল গতিতে স্বাভাবিকভাবে হাঁটেন, তাহলে ৩০ মিনিটে প্রায় ১০০ ক্যালরি বার্ন হয়। কিন্তু গতি যদি বেড়ে ৩.৫–৪ মাইল প্রতি ঘণ্টা হয়, তবে তিনি ১৫০–২০০ ক্যালরি খরচ করতে পারেন। দ্রুত হাঁটার সময় শরীর বেশি শক্তির চাহিদা তৈরি করে, ফলে কার্বোহাইড্রেট পোড়ানোর পর ফ্যাট স্টোর থেকেও শক্তি নেয়।ফিটনেস ট্রেইনারদের মতে, প্রতি ঘণ্টায় ৩–৪ মাইল গতিতে হাঁটা ওজন কমাতে সাহায্য করে।‘ব্রিস্ক ওয়াক’ ওজন নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিক গঠন উন্নত করার একটি কার্যকর উপায়। যদি কেউ ৩–৪ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে ১০ হাজার পদক্ষেপ হাঁটেন, তবে ৫০০–এরও বেশি ক্যালরি বার্ন করতে পারবেন।
গতি পরিবর্তন আরো বেশি ক্যালোরি বার্ন করে
২০১৫ সালে ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষকরা দেখিয়েছেন, বিভিন্ন গতিতে হাঁটলে সমান গতিতে হাঁটার তুলনায় প্রায় ২০% বেশি ক্যালরি খরচ হয়।গবেষণার প্রধান লেখক নিধি সীতাপাথি বলেন, ‘যেকোনো গতিতেই হাঁটলে কিছু শক্তি খরচ হয়, তবে গতি পরিবর্তনের সময়টা হলো যেন গ্যাসের প্যাডেলে চাপ দেওয়া। শরীরের গতিশক্তি বদলাতে পায়ের বেশি কাজ করতে হয়, আর এই প্রক্রিয়াতেই বাড়তি এনার্জি খরচ হয়।তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমরা দেখেছি হাঁটার দূরত্বও গুরুত্বপূর্ণ। ভিন্ন দূরত্বে মানুষ ভিন্ন গতিতে হাঁটে। তাই স্বল্প দূরত্বের ওপর নির্ভর করে গতি মাপা হলে আসল অগ্রগতি কম করে ধরা হতে পারে।’বায়োলজি লেটারস-এ প্রকাশিত ওই গবেষণায় গবেষকরা বলেন, ‘যেভাবে স্বাভাবিকভাবে হাঁটেন তার বাইরে গিয়ে হাঁটুন। বেশি এনার্জি খরচ করতে কিছু অস্বাভাবিক কাজ করুন। যেমন— ব্যাকপ্যাক নিয়ে হাঁটা, পায়ে ওজন বেঁধে হাঁটা, কিছুক্ষণ হাঁটা তারপর থেমে আবার শুরু করা, সোজা লাইনে না হাঁটে বাঁক নিয়ে হাঁটা।’
গতি বাড়ান
যদিও নিয়মিত হাঁটা সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, গতি বাড়ালে আয়ু বাড়তে পারে। ওই গবেষণার প্রধান গবেষক ডা. ওয়েই ঝেং, এমডি, পিএইচডি বলেন, ‘প্রতিদিন হাঁটার স্বাস্থ্য উপকারিতা আমরা জানি, কিন্তু হাঁটার গতি মৃত্যুহার কমাতে কিভাবে ভূমিকা রাখে, তা নিয়ে সীমিত গবেষণা হয়েছে।’তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে মাত্র ১৫ মিনিট দ্রুত হাঁটা মোট মৃত্যুহার প্রায় ২০% কমিয়েছে। অথচ দিনে তিন ঘণ্টা ধীরে হাঁটার প্রভাব তার থেকে অনেক কম ছিল। জীবনধারার অন্যান্য বিষয় নিয়েও হিসাব করার পর এই ফলাফল একই থেকেছে।’ গবেষণায় আরো জানা গেছে, দ্রুত হাঁটা শরীরের ওজন ও গঠন নিয়ন্ত্রণে রাখে, স্থূলতা ও তার ঝুঁকি, যেমন উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে চর্বি বেড়ে যাওয়ার সমস্যা কমায়। এ ছাড়া এটি হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং দীর্ঘায়ুতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন নতি স্বীকার, নেতানিয়াহুর পতন কী শুরু
ঢাকাভয়েস/এই
No comments