মানুষ ও মেশিনের ফিউশন : ভবিষ্যৎ কি নতুন এক যুগের পথে ?
বিজ্ঞান জগতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইলন মাস্কের নিউরালিংক। যুক্তরাজ্যে শুরু হয়েছে এর নতুন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে—মস্তিষ্ক আর কম্পিউটারের সরাসরি সংযোগ আর কল্পনা নয়, বাস্তব হতে চলেছে।
নিউরালিংক হলো কয়েন আকৃতির একটি ক্ষুদ্র চিপ, যা বসানো হয় মানুষের খুলিতে। চিপটির শত শত সূক্ষ্ম ইলেকট্রোড মস্তিষ্কের নিউরনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৈদ্যুতিক সংকেত সংগ্রহ করে। সেই সংকেত ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে পৌঁছে যায় কম্পিউটার বা স্মার্ট ডিভাইসে।
তথ্যসূত্র অনুযায়ী, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত (প্যারালাইজড) রোগী শুধু মনের চিন্তায় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন কম্পিউটার, স্মার্টফোন কিংবা হুইলচেয়ার। অর্থাৎ, শারীরিকভাবে অচল হলেও ডিজিটাল জগতে তিনি হয়ে উঠবেন সম্পূর্ণ স্বাধীন।
তবে বিতর্কও কম নয়। গবেষণার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। পশুর ওপর পরীক্ষার নৈতিকতা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। পাশাপাশি মস্তিষ্কে সংক্রমণ, যন্ত্রের ত্রুটি কিংবা উল্টো প্রযুক্তি মানুষের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে কি না—এসব নিরাপত্তাজনিত শঙ্কাও রয়ে গেছে।
তবু সম্ভাবনার ক্ষেত্র বিশাল। এএলএস, পারকিনসন বা অন্যান্য স্নায়বিক রোগে আক্রান্তরা হয়তো প্রথমবার ডিজিটাল জগতে নতুন জীবন পাবেন। ভবিষ্যতে শুধু চিন্তার মাধ্যমেই কথা বলা, টাইপ করা কিংবা স্মৃতি সংরক্ষণ সম্ভব হতে পারে। ইলন মাস্কের মতে, মানব মস্তিষ্ক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একসঙ্গে কাজ করবে—শুরু হবে হিউম্যান-এআই ফিউশন যুগ।
তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়—আমরা কি নতুন এক সভ্যতার দোরগোড়ায়, নাকি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে? তার উত্তর নির্ভর করছে নিউরালিংকের চলমান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফলের ওপর।
No comments