ব্রেকআপের পর নিজেকে সামলাবেন যেভাবে
ভালোবাসার সম্পর্কে বিচ্ছেদ মানসিকভাবে বড় আঘাতের মতো। একসময় যে মানুষটিকে জীবনের অংশ ভেবে প্রতিদিনের হাসি-কান্না ভাগ করেছেন, তাকে হারানোর বেদনা সহজে মুছে যায় না। তবে জীবন থেমে থাকে না। তাই সম্পর্ক ভাঙার পর কীভাবে নিজেকে সামলে আবারও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়— সেই দিকগুলো নিয়েই আজকের আলোচনা।
নিজের অনুভূতিকে স্বীকার করুন
ব্রেকআপের পর মন ভেঙে যাবে, দুঃখ-কষ্ট গ্রাস করবে— এটাই স্বাভাবিক। অনেকেই কষ্টকে ঢাকতে চুপ করে থাকেন বা জোর করে হাসি ধরে রাখেন। এতে মানসিক চাপ বাড়ে। বরং কান্না আসলে কেঁদে ফেলুন, ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করুন। এতে মন হালকা হবে।
সময় দিন নিজেকে
সম্পর্ক ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে নতুন কিছু শুরু করতে গিয়ে অনেকেই ভুল করেন। মনে রাখুন, সুস্থ হওয়ার জন্য সময় প্রয়োজন। নিজেকে সময় দিন, একা থাকার অভ্যাস করুন। ধীরে ধীরে বোঝার চেষ্টা করুন— জীবন একা হয়তো কঠিন, তবে অসম্ভব নয়।
সামাজিক যোগাযোগে সচেতন থাকুন
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপে সাবেক সঙ্গীর আপডেট দেখে কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক। তাই চাইলে সাময়িকভাবে ‘আনফলো’ বা ‘মিউট’ করে রাখতে পারেন। এতে অপ্রয়োজনীয় মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাবেন।
নতুন রুটিন তৈরি করুন
ব্রেকআপের পর আগের মতো দৈনন্দিন জীবন চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। এই সময়ে নতুন অভ্যাস গড়ে তুলুন— যেমন সকালে হাঁটা, বই পড়া, রান্না শেখা বা প্রিয় কোনো শখে মন দেওয়া। এগুলো আপনার মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে দেবে।
শরীরের যত্ন নিন
মানসিক কষ্টে অনেকেই খাওয়া-দাওয়া অবহেলা করেন বা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। দুটোই ক্ষতিকর। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান, শরীরচর্চা করুন। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে মানসিক দিক থেকেও শক্ত হয়ে উঠবেন।
ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে সময় কাটান
বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো দারুণ কার্যকর। তাদের সঙ্গে গল্প করুন, কোথাও ঘুরতে যান। প্রিয়জনদের সান্নিধ্য আপনাকে মনে করিয়ে দেবে— আপনি একা নন।
প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ব্রেকআপের কষ্ট দীর্ঘস্থায়ী হয়, যা হতাশা বা বিষণ্নতায় রূপ নিতে পারে। যদি মনে হয় নিজে সামলাতে পারছেন না, তবে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা কাউন্সেলরের সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।
ব্রেকআপ মানেই জীবন থেমে যাওয়া নয়। বরং এটি হতে পারে নতুনভাবে নিজেকে গড়ে তোলার সুযোগ। কষ্টকে স্বীকার করে ধীরে ধীরে নতুন পথে হাঁটতে শিখুন। একসময় বুঝবেন— সম্পর্ক ভাঙা জীবনের শেষ নয়, বরং নতুন শুরুর দরজা।
No comments