Adsterra

লোড হচ্ছে...

বৃষ্টির সময় করণীয় আমল

 

বৃষ্টির সময় করণীয় আমল, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News

বৃষ্টি নিছক একটি প্রাকৃতিক ঘটনার নাম নয়। নয় কোনো মেঘমালার অশ্রু বিসর্জন। এটি মহান রাব্বুল আলামিনের রহমতের বারতা। এর মাধ্যমে তিনি খরায় কাঠ হয়ে যাওয়া মাটিকে আবার উর্বর করে তোলেন।মাটির বুকে ফুটিয়ে তোলেন শস্যের হাসি। ব্যবস্থা করেন মানবজাতিসহ অন্য প্রাণিকুলের রিজিকের। তাই তো মহান আল্লাহ বৃষ্টির পানিকে বরকত পানি বলে আখ্যা দিয়েছেন।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

وَ نَزَّلۡنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً مُّبٰرَكًا فَاَنۡۢبَتۡنَا بِهٖ جَنّٰتٍ وَّ حَبَّ الۡحَصِیۡدِ ۙ﴿۹﴾

‘আর আমি আসমান থেকে বরকতময় পানি নাজিল করেছি।

‘অতঃপর তা দ্বারা আমি উৎপন্ন করি বাগবাগিচা ও কর্তনযোগ্য শস্যদানা।’ (সুরা : কাফ, আয়াত : ৯)

বৃষ্টির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাঁর রহমত ছড়িয়ে দেন। এটা আমার কথা নয়, মহান আল্লাহ নিজেই বলেছেন,

وَ هُوَ الَّذِیۡ یُنَزِّلُ الۡغَیۡثَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا قَنَطُوۡا وَ یَنۡشُرُ رَحۡمَتَهٗ ؕ وَ هُوَ الۡوَلِیُّ الۡحَمِیۡدُ ﴿۲۸﴾

‘মানুষ নিরাশ হয়ে যাওয়ার পর তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন, আর স্বীয় রহমত ছড়িয়ে দেন, তিনিই সব গুণে প্রশংসিত প্রকৃত অভিভাবক।’ (সুরা : শূরা, আয়াত : ২৮)

তাই মুমিনের উচিত বৃষ্টি এলেই মহান আল্লাহর শোকর করা।বৃষ্টিকে নবীজি (সা.)-এর আদর্শ মোতাবেক উপভোগ করা। মুমিনের বৃষ্টিবিলাস হবে নবীজি (সা.)-এর তরিকায়। তবেই তা আমাদের জন্য কল্যাণকর হবে। প্রকৃতির মতো আমাদের উর্বরতা হারানো মনকে সজীব করে তুলবে। নিম্নে বৃষ্টির সময় করণীয় নবীজি (সা.)-এর কিছু আমল তুলে ধরা হলো—

উপকারী বৃষ্টির জন্য দোয়া করা : বৃষ্টি যেমন উপকারী, তেমনি কখনো তা আল্লাহর হুকুমে দুর্ভিক্ষের কারণও হতে পারে।তাই আমাদের নবীজি (সা.) বৃষ্টি এলে উপকারী বৃষ্টির দোয়া করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, যখন বৃষ্টি হতো রাসুল (সা.) তখন বলতেন,

اللَّهُمَّ صَيِّباً نَافِعاً

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সায়্যিবান নাফিআহ।’

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি এ বৃষ্টিকে প্রবহমান এবং উপকারী করে দাও। (নাসায়ি, হাদিস : ১৫২৩)

অতিবৃষ্টি থেকে আশ্রয় চাওয়া : অনাবৃষ্টি যেমন ক্ষতিকর, অতিবৃষ্টিও ক্ষতিকর। আবু হুরায়রা‌ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অনাবৃষ্টির কারণেই কেবল দুর্ভিক্ষ হবে না, বরং অধিক বৃষ্টিপাত হতে থাকবে এবং জমিন কোনো কিছু উৎপাদন করবে না (ফলে তা দুর্ভিক্ষের কারণ হয়ে থাকে)। (মুসলিম, হাদিস : ৭১৮৩)

এ জন্য বৃষ্টি এলেই মহান আল্লাহর কাছে উপকারী বৃষ্টির জন্য দোয়া করা সুন্নত। অতিবৃষ্টি দেখা দিলে তা থেকে উত্তরণের দোয়াও নবীজি (সা.) শিখিয়েছেন। রাসুল (সা.) একবার অতিবৃষ্টিতে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন,

اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা।’

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি বৃষ্টি আমাদের আশপাশে বর্ষণ করো, আমাদের ওপরে নয়। (নাসায়ি, হাদিস : ১৫২৭)

বৃষ্টির পানি স্পর্শ করা : বৃষ্টির সময় সুযোগ হলে বৃষ্টির পানি স্পর্শ করা, বৃষ্টিতে ভেজাও সুন্নত। এতে নবীজি (সা.)-এর সুন্নত যেমন আদায় হবে, তেমনি শরীর ও মনের জন্যই এটি বেশ উপকারী। আনাস (রা.) বলেন, আমরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম, এমন সময় বৃষ্টি নামল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর কাপড় খুলে দিলেন। ফলে এতে বৃষ্টির পানি পৌঁছল। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! এরূপ কেন করলেন? তিনি বলেন, কেননা এটা মহান আল্লাহর কাছ থেকে আসার সময় খুবই অল্প। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৬৮)

আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া : বৃষ্টির সময়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো তখন মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা, নিজের গুনাহ থেকে ক্ষমা চাওয়া এবং সব প্রয়োজন পূরণে মহান আল্লাহর সাহায্য চাওয়া, কেননা বৃষ্টির সময় মহান আল্লাহ দোয়া কবুল করেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,  ‘বৃষ্টির সময়ের দোয়া কবুল হয়ে থাকে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৫৪০)

বৃষ্টি শেষে দোয়া : বৃষ্টি শেষেও রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবায়ে কিরামকে একটি বিশেষ দোয়া পড়ার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। দোয়াটি হলো,

مُطِرْنَا بِفَضْلِ اللَّهِ وَرَحْمَتِهِ

উচ্চারণ:  ‘মুতিরনা বিফাদলিল্লাহি ওয়া রহমাতিহ।’

অর্থ : আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে। (বুখারি, হাদিস : ১০৩৮)

মহান আল্লাহ আমাদের বৃষ্টিবিলাস আমলময় করে তোলার তাওফিক দান করুন।


No comments

Powered by Blogger.