রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রে দেড় ডজন নাম
বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) এজেন্ট দাবি করা এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম নিজের প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে সদুত্তর দিচ্ছেন না গোয়েন্দা সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে। বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) নিশ্চিত হয়েছে, সিআইএর সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই তার। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পতন ঘটানোর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তিনি। এমনকি পতন ঘটার পর ৪০ সদস্যের জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা এবং ওই সরকারে নিজের পছন্দের ১২ জন সদস্যকে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুতিও নিতে বলেছিলেন, যাদের সবাই চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গঠিত ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশের (জেপিবি) পদধারী নেতা ও অনুসারী। এই তালিকায় ইলিয়াস কাঞ্চনের নাম না থাকলেও রয়েছে দলটির দুই পদধারী নেতা এবং দলটির ছায়াতলে থাকা সাবেক চার আমলা (সাবেক সচিব) ও চারজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার নাম। তাদের মধ্যে একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও আরেকজন আড়াই বছর আগে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা। আমলাদের মধ্যে সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান সম্প্রতি গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, এনায়েতের তথ্যে নাম আসা সবাইকেই জিজ্ঞাসাবাদে সরকারের অনুমতি চাওয়া হবে। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের জড়িত থাকার বিষয়ে হাইপ্রোফাইল দেড় ডজন নাম এসেছে। সরকার অনুমতি দিলে সবাইকে পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যদিও অর্থায়নে দল গঠনের অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জেপিবির মহাসচিব শওকত মাহমুদ বলেছেন, কথিত ব্যক্তি এই দলের সদস্য নয় এবং দলের জন্য তিনি কোনো অর্থ দেননি। এদিকে জেপিবির সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে উঠে এসেছে ঝুমুর বারী নামে এক নারীর নাম। এনায়েত করিম জানিয়েছেন, এ ঝুমুর বারীই তাকে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন শওকত মাহমুদের সঙ্গে। পরে শওকত মাহমুদ পরিচয় করিয়ে দেন ইলিয়াস কাঞ্চন এবং দলটির নির্বাহী চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলনের সঙ্গে। ঝুমুর এ মামলায় এনায়েতের সহযোগী হিসেবে গ্রেফতার হওয়া গোলাম মোস্তফা আজাদের স্ত্রী। তার সঙ্গে পূর্ব থেকেই শওকত মাহমুদের সুসম্পর্ক ছিল। মূলত ঝুমুরই নেপথ্যে থেকে জেপিবি গঠন ও বর্তমান সরকারের পতন ঘটানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এনায়েতের কাছ থেকে অর্থ এনে দেওয়ার জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করতে থাকেন। একসময় একাত্তর টিভিতে জিএম অপারেশন হিসেবে চাকরি করা আজাদ ও নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে চাকরি করা ঝুমুর ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। এনায়েতকে জিজ্ঞাসাবাদে ষড়যন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে ওঠা ঝুমুরকে আটক করার চেষ্টা করছে ডিবি পুলিশ।
অপরদিকে এনায়েত জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, শুধু বর্তমান সরকারের পতন ঘটানোর ষড়যন্ত্রেই নয়, অতীতে বিএনপিতে ভাঙন ঘটানোসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে অর্থায়ন করেছেন তিনি। যোগাযোগ করতেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে। নিজের ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে অনেক হাই প্রোফাইলের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকাও। প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া টাকাই আবার ষড়যন্ত্রমূলক কাজে লাগাতেন। তার পরিবারের কেউ বাংলাদেশে না থাকায় এবং নিজে কোনো পদপদবিতে না থাকায় ভেবেছিলেন, সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকবেন। কখনো পরিস্থিতি খারাপের ইঙ্গিত পেলে দেশের বাইরে চলে যাবেন।
ডিবি সূত্র জানিয়েছে, জেপিবির নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনুযায়ী ২১ জেলা ও ১০০ উপজেলায় কমিটি গঠনের জন্যও টাকা দিয়েছেন এনায়েত। তার স্বপ্ন ছিল- জেপিবি কখনো ক্ষমতার অংশ হতে পারলে তিনি নিজেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন। তবে সেই পর্যায়ে না যাওয়া পর্যন্ত নেপথ্যে থেকেই কলকাঠি নাড়তে চেয়েছিলেন।
এনায়েত করিমের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ইনস্পেক্টর আক্তার মোর্শেদ গতকাল সময়ের আলোকে বলেন, এনায়েত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন। তার কাছে পাওয়া তথ্য যাচাই করে আর কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। ইতিমধ্যে অনেকের নাম আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে, যেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়। ডিবি জানিয়েছে, ইলিয়াস কাঞ্চন ও তার নবগঠিত দলের সঙ্গে এনায়েতের যোগাযোগের সত্যতা রয়েছে। দল গঠনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এনায়েত এ দলে প্রতি মাসে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিতেন।
অভিযোগ প্রত্যাখ্যান জেপিবির
চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ সংক্ষেপে জেপিবি। দলটির সেøাগান ঠিক করা হয় ‘গড়ব মোরা ইনসাফের দেশ’। জেপিবির মহাসচিব শওকত মাহমুদ সময়ের আলোকে বলেন, এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম আমাদের দলের কেউ নন। গোয়েন্দা সংস্থা থেকেই বলা হয়েছে, তিনি ভুয়া সদস্য। তা হলে তার কথা কীভাবে সত্য হয়? আমরা তো অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসছি শুরু থেকে। শেখ হাসিনার পতন চেয়েছি। এখন আমাদেরই বলা হচ্ছে, আমরা নাকি এ সরকারকে ফেলে দিতে চেয়েছি। এটা কোন কথা! তিনি বলেন, আমরা নতুন দল। নেই কোনো নিবন্ধন। একটা সরকারকে ফেলে দেওয়ার ক্ষমতা কি আমাদের আছে? আমি কিংবা আমাদের দলের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন এসব ষড়যন্ত্রে কোনোভাবে জড়িত নই।
আড়াই বছর আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কার হন সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ। তিনি ও চিন্তাবিদ-কলামিস্ট ফরহাদ মজহার ২০২৩ সালের মার্চে বনানীর এক হোটেলে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির এক সুধী সমাবেশ ও নৈশভোজের আয়োজন করেন। জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির ব্যানারে ওই অনুষ্ঠানে একাধিক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ছিলেন, যাদের শওকত মাহমুদের আগের দুই বিতর্কিত কর্মসূচিতেও দেখা যায়। যদিও বর্তমানে এ সংগঠনের অস্তিত্ব নেই। তাদের অনুষ্ঠানে অর্থের উৎস নিয়ে তখনও প্রশ্ন উঠেছিল।
বর্তমানে জেপিবি কীভাবে চলে? জবাবে শওকত মাহমুদ বলেন, নিজেরা চাঁদা দিয়ে দল চালাই। আমরা আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানটি করেছি ২ লাখ টাকায়। আর বাকি সেমিনার, মানববন্ধন প্রোগ্রামগুলো প্রেস ক্লাবে করেছি। আর ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে অনেক বড় লোকের অফার ছিল; কিন্তু তিনি কোনো মানুষের টাকায় দল গড়েননি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার নিজের ঘরেই বাজার নেই। আর সেখানে বলা হচ্ছে, দলের জন্য বাইরের টাকা আসছে! এগুলো অহেতুক কথাবার্তা।
একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ২৫ এপ্রিল বিদেশে গেছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তার ব্রেনে টিউমার হয়েছে, অপারেশন হয়েছে, টিউমার পুরোপুরি কাটা যাচ্ছে না। কাটলে পঙ্গু বা প্যারালাইজড হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ক্যামো থেরাপি চলছে, ৩০টা দিতে হবে। তিনি কথা বলতে পারেন না, অনেককে চেনেন না। থেরাপি দেওয়ার পরে অবস্থা ডেভেলপ করবে।
এনায়েত জড়িত ছিলেন আরও অনেক মিশনে
ডিবি সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে বিএনপি ভাঙার অ্যাসাইনমেন্টে জড়িত ছিলেন এনায়েত। তৎকালীন ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তা ও ‘র’-এর যোগসাজশে এ কাজ করেন তিনি। এনায়েত করিম বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের নাম প্রকাশ করেন, যারা তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এবং নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ায় ছিলেন। এ কাজে তিনি দেড় কোটি টাকাও খরচ করেছেন। ২০২৩ সালে বনানীর শেরাটন হোটেলের ইনসাফ কায়েম কমিটির অনুষ্ঠানের খরচও বহন করেন তিনি। দেশে যখনই কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়, তখনই বাংলাদেশে এসে উপস্থিত হন এবং কিছু বিনোয়োগ করে মোটা অঙ্কের টাকা কামিয়ে নেন। এভাবে তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশে এসে তৎপরতা চালান এবং তৎকালীন ডিজিএফআই তাকে ভাড়াটে হিসেবে কাজে লাগিয়েছিল বলে জানা যায়। ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ বনানীর শেরাটন হোটেলে আয়োজিত ইনসাফ কমিটির সভার পুরো খরচ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।
ডিবি আরও জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর পর আবার তিনি বাংলাদেশে এসে তৎপরতা শুরু করেন। আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার একটি গুঞ্জন আছে। এ গুঞ্জন উসকে দিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ফেল করিয়ে আরেকটি ওয়ান-ইলেভেন বা জুলাই আন্দোলনের মতো ঘটনা ঘটিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের ষড়যন্ত্র করাই ছিল তার লক্ষ্য। এ ষড়যন্ত্রে জড়িত আছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান লেফেটন্যান্ট জেনারেল (অব.) সাইফুল আলম ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) তাবরেজ শামসসহ একাধিক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী এনায়েত নিজেই সিআইএর জাল ডকুমেন্ট তৈরি করেছেন। সেগুলো তিনি ব্যবসায়ী, আমলা, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনদের দেখিয়ে সিআইএর বড় এজেন্ট বলে দাবি করতেন। স্ক্যান করা ডকুমেন্ট তিনি আবার কাউকে মোবাইলে পাঠাতেন। কোনো কোনো ব্যবসায়ী তার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন বলেও জানা গেছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েতের তথ্যগুলো যাচাই করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, এনায়েত করিম ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান। ২০০৪ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট পান। গত ৬ সেপ্টেম্বর সকালে নিউইয়র্ক থেকে কাতার এয়ারওয়েজে করে তিনি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থান করেন। পরে রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে অবস্থান নেন।
এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিন্টো রোডের সামনে গাড়ি নিয়ে সন্দেহজনক ঘোরাঘুরির সময় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নিজেকে সিআইএর পরিচালক দাবি করেন। পরে পুলিশ তাকে এবং তার সহযোগী মোস্তফাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করে। এরপর প্রথমে দুদিন ও পরে আরও ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আগামী মঙ্গলবার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে তোলা হবে।
এদিকে একজন ডিআইজির সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি চাউর হলেও মূলত এনায়েতের সঙ্গে দুজন ডিআইজির যোগাযোগ ও সখ্যের তথ্য পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে একজন ৬ সেপ্টেম্বরে এনায়েত করিমকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে যান। আরেকজনের সঙ্গে ঢাকায় আসার পর তার সাক্ষাৎ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা আরও বলেন, এনায়েতের সঙ্গে একজন প্রভাবশালী আমলার গভীর যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। এ আমলার নামে দুদকের বেশ কিছু মামলা আছে। সেসব মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে নানা সময় এনাতের ওই আমলার কথাবার্তা, যোগাযোগ ও বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। মামলা থেকে বাঁচানো বা রক্ষা করার কথা বলে দেড়শ কোটি টাকার চুক্তি হয় তার সঙ্গে। তবে টাকা লেনদেনের কোনো প্রমাণ এখনও হাতে পাওয়া যায়নি।
No comments