Adsterra

লোড হচ্ছে...

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘর্ষের নেপথ্যে কী ?

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘর্ষের নেপথ্যে কী, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh,

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে সংঘর্ষ তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও শনিবার (২৬ জুলাই) নতুন নতুন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষই আত্মরক্ষার দাবি করে অপরপক্ষকে যুদ্ধ বন্ধ ও আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে।

এখন পর্যন্ত সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। গত ১৩ বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ সীমান্ত উত্তেজনা।

দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে প্রতিবেশি দেশদুটির ছয়টি সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি ও রকেট হামলার মধ্য দিয়ে এই সহিংসতা শুরু হয়।

গতকাল শুক্রবারও সীমান্তবর্তী চারটি প্রদেশের কাছে একাধিক স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছে থাই সেনাবাহিনী। কম্বোডিয়ার ওপর থাইল্যান্ড বিমান হামলা চালিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

চলমান এই সংঘাতের কারণে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ নিরাপত্তার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

এ নিয়ে এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো সংঘর্ষে জড়াল দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশ। এর আগে মে মাসে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা শুরু হয়েছিল।

প্রতিবেশি এই দুই দেশের সংঘাতের নেপথ্যে কী আছে, চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।


সবশেষ উত্তেজনার সূত্রপাত যেভাবে

চলতি বছরের মে মাসে ছোট একটি সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির মধ্য দিয়ে সংঘাতের সূত্রপাত হয়।

সে সময় এক কম্বোডিয়ান সেনা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। দুই পক্ষই দাবি করে যে তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। এ নিয়ে তখন উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর এই সামরিক উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

পরে দুই দেশ উত্তেজনা হ্রাসে একমত হয়। তবে সীমান্তে কড়াকড়ি, নিষেধাজ্ঞা ও বাকযুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এরপর কম্বোডিয়া সীমান্তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাইল্যান্ড। এর ফলে শুধু শিক্ষার্থী, চিকিৎসাপ্রার্থী ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো মানুষ দেশটিতে যাতায়াত করতে পারছিল না। এরপর বৃহস্পতিবার পুরো সীমান্তই বন্ধ করে দেয় থাইল্যান্ড।

জবাবে থাই চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নিষিদ্ধ করে কম্বোডিয়া। এ ছাড়াও থাইল্যান্ড থেকে জ্বালানি, গ্যাস, ফলমূল ও সবজি আমদানিও বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এমনকি প্রতিবেশি দেশটির সঙ্গে কিছু আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট সংযোগ ও বিদ্যুৎ সরবারহও স্থগিত করেছে নমপেন।

                          ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ

থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বহু দশক ধরেই বিরোধপূর্ণ। এ বিরোধের মূল উৎস ১৯০৭ সালে ফরাসি উপনিবেশিক শাসনামলে আঁকা একটি মানচিত্র।

কম্বোডিয়াকে থাইল্যান্ড থেকে আলাদা করতে ওই মানচিত্র তৈরি করা হয়েছিল। ওই মানচিত্র ধরে কিছু এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে কম্বোডিয়া। তবে মানচিত্রটি প্রত্যাখ্যান করেছে থাইল্যান্ড।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিরোধ রয়েছে প্রায় এক হাজার বছরের পুরোনো প্রেয়া ভিহেয়ার মন্দির নিয়ে। ১৯৬২ সালে কম্বোডিয়াকে এই মন্দির এলাকার মালিকানা দেয় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। যার ফরে দেশদুটির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খারাপ হয়ে পড়ে।

এরপর ২০১১ সালে নতুন করে সংঘর্ষ বাঁধে, যেখানে ২০ জনের মতো নিহত হন এবং বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর কম্বোডিয়া আবার বিচার আদালতের দ্বারস্থ হয় এবং ২০১৩ সালে আদালত আবারও তাদের পক্ষে রায় দেয়।

বর্তমানে কম্বোডিয়া আবার আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তবে আদালতের এখতিয়ার মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে থাইল্যান্ড।


থাই রাজনীতিতে তোলপাড়

এদিকে, উভয় দেশের জাতীয়তাবাদী মনোভাব দুই দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

এরই মধ্যে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে এক কম্বোডিয়ান শীর্ষ নেতার সঙ্গে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের পর থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে গত ১ জুলাই তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

জুন মাসে ফাঁস হওয়া ওই ফোন কলে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনকে “চাচা” বলে সম্বোধন করেন সিনাওয়াত্রা এবং থাইল্যান্ডের সামরিক নেতৃত্বের সমালোচনা করেন। সমালোচকরা এসব মন্তব্যকে জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি অসম্মান হিসেবে অভিহিত করেছেন।

হুন সেন পেতংতার্নের বাবার দীর্ঘদিনের বন্ধু ছিলেন। তবে সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া ফোনালাপ থাইল্যান্ডজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দেয়। এরপর পেতংতার্নকে সরিয়ে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফুমথম ওয়েচায়াচাইকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.