Adsterra

লোড হচ্ছে...

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষ কেন ?

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষ কেন, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh,

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার দীর্ঘদিনের উত্তেজনা ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নেয় বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই)। থাই সরকারের তথ্য অনুযায়ী অন্তত ১২ জন থাই নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।


কম্বোডিয়ার পক্ষের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনো জানা যায়নি।  

দুই পক্ষই সংঘর্ষ শুরু হওয়ার জন্য একে অপরকে দায়ী করছে। শুরুটা সীমান্তে গুলিবিনিময় থেকে হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়া রকেট হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড বিমান হামলা চালিয়েছে কম্বোডিয়ান সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে।


এই উত্তেজনার পেছনে কী আছে ?

এই বিরোধ নতুন নয়। এর শিকড় শত বছরের পুরনো। ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনামলে কম্বোডিয়ার সীমানা নির্ধারণের সময় থেকেই এই বিরোধ চলে আসছে।

২০০৮ সালে বিষয়টি সরাসরি শত্রুতায় রূপ নেয়। তখন কম্বোডিয়া বিতর্কিত অঞ্চলে থাকা ১১ শতকের এক হিন্দু মন্দিরকে (প্রাচীন খেমার স্থাপনা) ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়।

তখন থেকেই দুই দেশের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ ঘটেছে। এতে বিভিন্ন সময়ে সেনা সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

মে মাসে এক কম্বোডিয়ান সেনা সংঘর্ষে নিহত হলে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ে। এরপর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছায়।

গত দুই মাসে উভয় দেশ একে অপরের ওপর সীমান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কম্বোডিয়া থাইল্যান্ড থেকে ফলমূল, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ আমদানি বন্ধ করেছে। পাশাপাশি উভয় দেশ সীমান্তে সেনা সংখ্যা বাড়িয়েছে।


বৃহস্পতিবার ঠিক কী ঘটেছিল ?

দুই দেশেরই কথা ভিন্ন। থাইল্যান্ডের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএসসি) জানায়, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টার কিছু সময় পর কম্বোডিয়ান সেনারা থাই সীমান্তে নজরদারির জন্য ড্রোন পাঠায়।

পরে রকেটচালিত গ্রেনেডসহ কম্বোডিয়ান সেনারা সীমান্তের কাছে জড়ো হয়। থাই সেনারা মুখে সতর্কতা জানিয়ে আলোচনা করতে চাইলেও তাতে কাজ হয়নি বলে দাবি করা হয়।

সকাল ৮টা ২০ মিনিটে কম্বোডিয়ান সেনারা গুলি ছোড়ে, এবং থাই সেনারা পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হয়।

থাইল্যান্ড অভিযোগ করে, কম্বোডিয়া ভারী অস্ত্র যেমন বিএম-২১ রকেট লঞ্চার ও কামান ব্যবহার করেছে, যার ফলে থাই সীমান্তের হাসপাতাল, পেট্রল পাম্পসহ ঘরবাড়িতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

অন্যদিকে কম্বোডিয়ার দাবি, সকাল সাড়ে ৬টায় থাই সেনারা চুক্তি লঙ্ঘন করে সীমান্তের একটি হিন্দু মন্দির এলাকায় প্রবেশ করে এবং মন্দির ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া বসায়।

                          ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

এরপর থাই সেনারা সকাল ৭টার কিছু পর ড্রোন চালায় এবং সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ফাঁকা গুলি চালায় বলে দাবি করেন কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা।

পরে সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে থাই সেনারা গুলি চালায়। এতে কম্বোডিয়ান বাহিনী আত্মরক্ষায় বাধ্য হয় বলে জানায় নমপেন পোস্ট নামে একটি গণমাধ্যম।  

কম্বোডিয়া আরও অভিযোগ করেছে, থাইল্যান্ড অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ও বিমান হামলা চালিয়েছে তাদের ভূখণ্ডে।


যুদ্ধের আশঙ্কা কতটা ?

থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বলেন, এই বিরোধ সংবেদনশীল। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কূটনৈতিকভাবে এটি মোকাবিলা করতে হবে।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত বলেন, তাদের দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়, তবে সশস্ত্র আগ্রাসনের জবাবে সশস্ত্র প্রতিরোধ ছাড়া বিকল্প নেই।

বিশ্লেষক জোনাথন হেড বলছেন, অতীতে এরকম সংঘর্ষ দ্রুতই থেমে গেছে এবং এবারও তেমনটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে তিনি সতর্ক করে দেন যে, বর্তমানে উভয় দেশের নেতৃত্বে এমন কেউ নেই যিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে পারেন।


No comments

Powered by Blogger.