বিশ্বের ২য় ক্ষুদ্রতম দেশ মোনাকা
ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র মোনাকা। এটি আয়তনে পৃথিবীর
২য় ক্ষুদ্রতম,
এবং পৃথিবীর সর্বোচ্চ জনঘনত্ব-বহুল রাষ্ট্র। কেবল মাত্র ভ্যাটিকান
সিটির আয়তন মোনাকোর চেয়ে কম। এর আয়তন ১.৯৬ বর্গ কিলোমিটার।
ফ্রান্সের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত
পশ্চিম ইউরোপের দেশ মোনাকো। দেশটির তিন দিকে ফ্রান্স আরেক দিকে ভূমধ্যসাগর।
সমুদ্রসৈকত আর ক্যাসিনোর জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি রয়েছে মোনাকোর। এ কারণেই সারা
বিশ্বের ধনীদের কাছে এটি আকর্ষণীয় একটি জায়গা (ক্যাসিনোগুলোতে মোনাকোবাসীর প্রবেশ
নিষিদ্ধ)। পর্যটন শিল্পই দেশটির অর্থনীতির প্রধান চালিকা। জনগণের জীবনযাত্রার মানও
খুব উন্নত।
বিশ্বের অন্যতম সেরা মোটর রেস ভেন্যু মোনাকো। এক সময় রোমান
সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা মোনাকো দীর্ঘ সংঘাতের পর গ্রিমাল্ডি পরিবারের হাতে আসে। সে
সময় রিপাবলিক অব জেনোয়ার অধীনে গ্রিমাল্ডি পরিবার মোনাকো শাসন করত। ১৭৯৭ সালে
জেনোয়া রাষ্ট্রটি ভেঙে গেলে আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মোনাকো। ১৮৬১ সালে ফ্রান্সের
সঙ্গে এক চুক্তির মাধ্যমে মোনাকোর স্বাধীনতা ও সার্বভৌত্ব স্বীকৃত হয়। দেশটির
রাষ্ট্রীয় নাম প্রিন্সিপালিটি ও মোনাকো। শাসন ব্যবস্থা হিসেবে সাংবিধানিক
রাজতন্ত্র চালু আছে মোনাকোতে। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে দেশটি।
শক্তিশালী কোনো সামরিক বাহিনী না থাকায় সার্বভৌমত্ব ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে
অনেকাংশেই ফ্রান্সের ওপর নির্ভরশীল দেশটি। কর্মজীবীদের বড় অংশই পর্যটন শিল্পের
সঙ্গে জড়িত।
জনসংখ্যার
৮৩ ভাগ খ্রিস্টান। উচ্চশিক্ষার জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি ইংরেজি মাধ্যম
একাডেমি রয়েছে
সরকারীভাবে মোনাকার রাজধানী না থাকলেও সবচেয়ে বিত্তশালী চতুর্থাংশ মণ্টি কার্লোকে মোনাকোর কেন্দ্র বলা হয়। মোনাকোর রাজনীতি মূলত রাজতন্ত্র নির্ভর। সেখানে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রচলিত। মোনাকোর বর্তমান শাসকের নাম আলবার্ট দ্বিতীয়।তিনিই বর্তমানে মোনাকো শাসন করছেন।
মোনাকোতে পৃথিবীর সবচেয়ে কম দরিদ্র লোক বসবাস করে। মোনাকোতে
কোন আয়কর দিতে হয় না। বিশ্বের অনেক দেশের ধনীরা এখানে সম্পদ লুকিয়ে রাখে।
মোনাকোর জিডিপির সবচেয়ে বড় খাত হলো ক্যাসিনো। তবে মোনাকোর নাগরিকরা ক্যাসিনোতে
প্রবেশ করতে পারেনা।
এই দেশের আকর্ষণ কাসিনো বা জুয়াখেলার আখড়াগুলি। জুয়াখেলার
অঙ্কের যে তত্ব প্রযোয্য সেই প্রোবাবিলটি বা সম্ভাবনা তত্বের এক বিখ্যাত পদ্ধতির
নাম মণ্টি কার্লো মেথড।
মোনাকো ধনীদের জন্য পছন্দের একটি জায়গা কারণ এখানে বিশাল
বিশাল অট্টালিকা রয়েছে। তাছাড়া মনোরোম সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি হচ্ছে মোনাকো। এই
দেশের আকর্ষণীয় একটি বস্তু হচ্ছে ইয়োট। ভূমধ্যসাগরের বুকে দেখা যায় সারিসারি
ইয়োটের মেলা। এটি দেখতে ছোট জাহাজের মত। যেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
ইয়োটের ভিন্নতা চোখে পড়ার মতো।
সাগরের উপকূলে হওয়াতে দেশটির সৌন্দর্য অত্যন্ত মনোরম। পাহাড়ে
শরীরে বেড়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় অট্টালিকা
সমুদ্রের পিঠস্থান থেকে একটু উপরে হেঁটে গেলে দেখা যাবে এক
গার্ডেন। স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় JARDIN EXOTOUE. গার্ডেনটি
ক্যাকটাসের জন্য বিখ্যাত। এখানে অনেক প্রজাতির ক্যাকটাস দেখতে পাওয়া যায়।
মোনাকোর পর্যটন কেন্দ্র গুলোর মধ্যে ওল্ড মোনাকো জাদুঘর, লার্ভোটো বিচ, ফোর্ট অ্যান্টোইন থিয়েটার, সেন্ট মার্টিন গার্ডেন, অপেরা দে মন্টে-কার্লো, গ্রিমাল্ডি ফোরাম, সেন্ট নিকোলাস ক্যাথিড্রাল, মোনাকোর এক্সটিক উদ্যান, মোনাকোর প্রিন্স প্যালেস ইত্যাদি জায়গাগুলো অন্যতম।
চাইলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা ভয়েজ পরিবারের অংশ। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিংবা মতামত বা সৃৃজনশীল লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানায়। নাম সহ প্রকাশ করতে চাইলে লেখার নিচে নিজের নাম, পরিচয়টাও উল্লেখ করে দিন। ঢাকা ভয়েজে প্রকাশিত হবে আপনার লেখা। মেইল : dhahkavoice.news24@gmail.com
follow our Twitter account Dhaka Voice


No comments