টানা ৮ ঘণ্টা ঘুম, নাকি দুই ভাগে, কোনটি শরীরের জন্য বেশি ভালো
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, স্বাস্থ্যের পক্ষে কি একটানা ৮ ঘণ্টা ঘুম সবচেয়ে ভালো, নাকি দুই ভাগে ভেঙে ঘুমালে শরীর ভালো থাকবে? এই বিষয়ে আধুনিক গবেষণা ও চিকিৎসকরা কী বলছে, তা জানাতেই আজকের প্রতিবেদন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক—
আধুনিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমের দুটি প্যাটার্নই ভালো। কোনটি আপনার শরীর, রুটিন ও মানসিক অবস্থার সঙ্গে মানায়, সেটাই আসল ব্যাপার। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের ঘুমের চক্র এমনভাবে তৈরি যে রাতে একটানা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর মধ্যেই শরীর গভীর ঘুম, হালকা ঘুম ও তন্দ্রার মতো প্রতিটি ধাপ পার হয়।
এই ধাপগুলো স্মৃতি, ইমিউনিটি, মনোযোগ, হারমোনের ব্যালান্স এবং সার্বিক শক্তি—সব বজায় রাখতে সাহায্য করে।
একটানা ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক বিশ্রাম নেয়, টিস্যু রিপেয়ার করে, স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে এবং মনোযোগ বাড়ে। ফলে পরের দিন কাজে মন দেওয়া সহজ হয়। এই বিষয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মঞ্জুষা আগরওয়াল জানান, রাতের একটানা ঘুম মানুষের জীবনের স্বাভাবিক ছন্দের সঙ্গে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ঘুম ভেঙে যাওয়া, দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া বা মাঝরাতে ফোন দেখার মতো অভ্যাস শরীরের এই ছন্দ নষ্ট করে দেয়।
তবে অনেকেই স্বাভাবিকভাবে ‘বাইফেসিক স্লিপ’ বা দুই ভাগে ঘুমানোর অভ্যাস করে ফেলেছেন। যেমন রাতে ৬–৭ ঘণ্টা ঘুমিয়ে দিনের বেলা ২০–৩০ মিনিটের জন্য অল্প করে বিশ্রাম নেওয়া। এই বিশ্রাম মানসিক সতেজতা, মনোযোগ ও ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।
অতীতে প্রথম ঘুম ও দ্বিতীয় ঘুম নামে দুই ধাপে ঘুমের পদ্ধতি চালু ছিল। কিন্তু এখনকার ব্যস্ত জীবন, কর্মসংস্থান এবং স্কুল-কলেজের নির্দিষ্ট সময়সূচির কারণে একটানা ঘুমই অধিকাংশ মানুষের জন্য সহায়ক।
এ বিষয়ে নিউরোলজিস্ট ডা. প্রশান্ত মাখিজা বলেন, দুই ভাগে ঘুমানো যেতে পারে। তবে শর্ত হলো, দুইটি ঘুমই দীর্ঘক্ষণ হওয়া উচিত। সাধারণত ঘুম ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার কম হলে শরীর দৈনিক ঘুম চক্র শেষ করতে পারে না।
অনেক সময় মানুষ মনে করেন, রাতে ৪ ঘণ্টা ঘুমিয়ে সকালে আরো ৩ ঘণ্টা ঘুমালেই হবে। কিন্তু এই পদ্ধতি বেশিরভাগ মানুষেরই কাজে লাগে না। কারণ, এতে ঘুমের নানা স্তর ভেঙে যায়। ফলে মস্তিষ্কও নিজেকে পর্যাপ্ত পুনরুদ্ধারের সুযোগ পায় না।


No comments