পুরুষ সংকটে লাটভিয়ায় ভাড়াটে স্বামীর চাহিদা তুঙ্গে
ইউরোপের দেশ লাটভিয়ায় লিঙ্গ অনুপাত এমনভাবে বদলে গেছে যে সেখানে এখন পুরুষের তুলনায় নারী উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। জনসংখ্যার এই বিপুল ভারসাম্যহীনতার কারণে বিবাহযোগ্য অনেক নারী পাত্র না পেয়ে অসুবিধায় পড়ছেন। আর সেই শূন্যস্থান পূরণ করতেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এক নতুন পরিষেবা-‘অস্থায়ী স্বামী’ ভাড়া!
‘দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট’-এর তথ্য অনুযায়ী, লাটভিয়ায় নারী-পুরুষের অনুপাত এমনভাবে বদলেছে যা ইউরোপের গড় অনুপাতের প্রায় তিন গুণ। শুধু যুব সমাজ নয়, ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রেও নারী-পুরুষের ব্যবধান ভয়াবহ-বয়স্ক নারীর সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় তিন গুণ।
ফলাফল-কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা, সামাজিক পরিসর-সবখানেই নারীরা সংখ্যাগুরু। অনেক ক্ষেত্রেই অফিস থেকে ব্যক্তিগত জীবন পর্যন্ত পুরুষের অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন, পুরুষ বন্ধু খুঁজতে বিদেশ ভ্রমণের ঘটনাও এখন সাধারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পুরুষের ঘাটতিতে বিপাকে পড়া নারীরা ঝুঁকছেন ভাড়ায় স্বামী পরিষেবার দিকে। বাড়ির নানা কাজ-
১. কাঠের কাজ।
২. মেরামত।
৩. রং করা।
৪. বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন।
৫. পোষ্য সামলানো।
৬.পর্দা লাগানো।
এমনকি দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ছোটখাটো কাজও করে দিচ্ছেন এই ভাড়াটে পুরুষরা।
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো এখন এই ‘হ্যান্ডি হাজব্যান্ড’ পরিষেবায় কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। ঘণ্টা বা দিনের ভিত্তিতে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়-এবং তা যথেষ্ট আকর্ষণীয়।
এর পাশাপাশি অনলাইনে বা ফোনের মাধ্যমে এক ঘণ্টার জন্যও ‘স্বামী ভাড়া’ করার পরিষেবা চরম জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লাটভিয়ায় পুরুষদের কম আয়ুষ্কালের পেছনে মূল কারণ-
১. উচ্চ মাত্রায় ধূমপান (পুরুষদের ৩১%, নারীদের মাত্র ১০%)।
২. স্থূলতা।
৩. অনিয়মিত জীবনযাপন।
৪. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
এ কারণে লাটভিয়ার জনসংখ্যায় পুরুষদের সংখ্যা দ্রুত কমছে, আর নারী-পুরুষের ব্যবধান প্রতি বছরই বাড়ছে।
শুধু লাটভিয়া নয়, ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশেও ‘রেন্ট মাই হ্যান্ডি হাজব্যান্ড’ পরিষেবা চালু হয়েছে। আধুনিক সমাজে একাকিত্ব ও লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা এই নতুন ব্যবসাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলছে।
লাটভিয়ার পরিস্থিতি এখন শুধু সামাজিক সমস্যাই নয়, দ্রুত বদলে যাওয়া জনসংখ্যাগত সংকটেরও এক বাস্তব চিত্র।


No comments