তওবা-ইসতেগফারে আল্লাহর সন্তুষ্টি
গুনাহ করা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। মানুষ ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় গুনাহ করে ফেলে। এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। অস্বাভাবিক হলো গুনাহের ওপর অটল থাকা, তওবা না করা। গুনাহের পর তওবা করলে মহান আল্লাহ খুশি হন এবং তিনি বান্দার গুনাহ ক্ষমা করে দেন। আর তওবা না করলে তিনি বান্দার প্রতি রাগান্বিত হন। তাই ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় গুনাহ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তওবা-ইসতেগফার করা কাম্য।
আল্লাহতয়ালা কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনরা! আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করো। অসম্ভব নয় যে, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের এমন উদ্যানে প্রবেশ করাবেন, যার নিচে নহর বহমান থাকবে, সেই দিন, যেদিন আল্লাহ নবীকে এবং তার সঙ্গে যারা ইমান এনেছে তাদের লাঞ্ছিত করবেন না। তাদের আলো তাদের সামনে ও তাদের ডান পাশে ধাবিত হবে। তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য এ আলোকে পরিপূর্ণ করে দিন এবং আমাদের ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি সব বিষয়ে শক্তিমান।’ (সুরা তাহরিম ৮)
বান্দার তাওবায় আল্লাহ অত্যন্ত খুশি হন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাদের কেউ (গুনাহ থেকে) তওবা করলে মহান আল্লাহ এত খুশি হন, যেমন কেউ হারানো বস্তু ফিরে পেলে খুশি হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ ৪২৪৭)
রাসুল (সা.) ছিলেন নিষ্পাপ। সগিরা-কবিরা সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্ত ছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি দৈনিক সত্তর থেকে একশত বার আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। উম্মতকে শিখিয়েছেন রবের দিকে ফিরে আসার পথ হলো তওবা ও ইসতেগফার। আমরা সচেতন না হয়ে উদাসীনতায় ডুবে আছি। আমাদের তওবার চেয়ে গুনাহের সংখ্যাই বেশি।
সম্পূর্ণ নিষ্পাপ হয়েও যদি রাসুল (সা.)-এর তওবার আধিক্য এত বেশি হতে পারে, তাহলে আমরা তার উম্মত হয়ে কেন তওবা ইসতেগফারের প্রতি মনোনিবেশ করব না? কেন গুনাহ থেকে বেঁচে থাকব না? গুনাহ যত বড়ই হোক, খাঁটি দিলে তওবা করলে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। কেননা আল্লাহর রাগের চেয়ে দয়া বেশি। কঠোরতার চেয়ে ভালোবাসা বেশি।
তওবা-ইসতেগফারের মাধ্যমে যেমন আল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা অর্জন হয় তেমনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অফুরন্ত নেয়ামত ও বরকত লাভ হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের জন্য সৃষ্টি করবেন উদ্যান। আর তোমাদের জন্য নদ-নদীর ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (সুরা নুহ ১০-১২)
ঢাকা ভয়েস /এসএস
No comments