Adsterra

লোড হচ্ছে...

বাগরাম সামরিক ঘাঁটি ই কেন চান ট্রাম্প ?

                              বাগরাম সামরিক ঘাঁটি ই কেন চান ট্রাম্প, তালেবান, কাবুল, সামরিক ঘাঁটি, চীন, মধ্য এশিয়া, শাহরিয়ার সোহাগ, Shahriar Sohag, আফগানিস্তান, আমেরিকা

আফগানিস্তানে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি বাগরাম ফেরত চেয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের দাবি, বাগরাম বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি চীনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির এলাকার মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে। তিনি এই ঘাঁটি না পেলে কঠিন শাস্তির ইঙ্গিতও দিয়েছেন।

তবে ট্রাম্পের এই দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে আফগান তালেবান প্রশাসন। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফ ফাসিহুদ্দিন ফিতরাত স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন  আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি মাটি নিয়েও কোনো চুক্তি সম্ভব নয়।

বর্তমানে বাগরাম ঘাঁটি তালেবান সরকারের নিয়ন্ত্রণে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় ঘাঁটিটি হস্তান্তর করে। এরপর থেকেই এটি নিয়ে শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের মধ্যকার নতুন কূটনৈতিক উত্তেজনা।


২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর প্রায় দুই দশক আফগানিস্তানে অবস্থানকালে বাগরাম বিমানঘাঁটি ছিল মার্কিন সেনাদের প্রধান ঘাঁটি। তবে ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময়, যুক্তরাষ্ট্র ঘাঁটিটি তালেবান সরকারের হাতে তুলে দিয়ে সেখান থেকে সরে আসে।


কাবুল থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত বাগরাম বিমানঘাঁটি মূলত সোভিয়েত যুগে নির্মিত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এটিকে আফগান যুদ্ধে সামরিক কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। প্রায় ৭৭ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই ঘাঁটিতে রয়েছে দুটি বিশাল রানওয়ে, যার একটি প্রায় ৩.৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। এতে করে বি-৫২ বোমারু বিমানসহ বিশাল কার্গো বিমানও সহজে ওঠানামা করতে পারে।


এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অবকাঠামো এবং চীনের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিকটবর্তী অবস্থানের কারণে বাগরাম বিমানঘাঁটিকে যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। বিশেষ করে চীনকে নজরদারিতে রাখার জন্য এই ঘাঁটির কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন মার্কিন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন ভারত থেকে যেভাবে দেশে ঢুকছে জাল নোট

ট্রাম্প বারবার বলছেন, বাইডেন প্রশাসনের ২০২১ সালের আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার ছিল ‘একটি মারাত্মক ভুল’। এমনকি ট্রাম্প প্রকাশ্যে দাবি করেছেন, বাগরাম শুধু আফগানিস্তান নয়, চীনকেও নজরদারির আওতায় রাখার একটি শক্ত ঘাঁটি।


যদিও নিজের প্রথম মেয়াদে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে তালেবানের সঙ্গে ‘দোহা চুক্তি’ করেন ট্রাম্প নিজেই। তবে তার দাবি, সেনা প্রত্যাহারের পরও ওয়াশিংটনের নিয়ন্ত্রণেই রাখতে চেয়েছিলেন ঘাঁটিটি।

তবে, তালেবান সরকার বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত দেবে না এমন ঘোষণার পর বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস।

অন্যদিকে, চীন বিষয়টিকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় হুমকি হিসেবে দেখছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, ‘আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে আফগান জনগণ।’প্রকৃতপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই বিমানঘাঁটি এতো গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে এটি এমন একটি ঘাঁটি, যেখান থেকে পুরো এশিয়ার ওপর নজরদারি করা সম্ভব। কারণ মধ্য এশিয়ার এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ যে নেবে তার রাজত্বেই থাকবে ইউরেশিয়া।

No comments

Powered by Blogger.