Adsterra

লোড হচ্ছে...

প্রস্রাব বা বায়ুর বেগ চেপে রেখে নামাজ পড়া কি জায়েজ ?

 

প্রস্রাব বা বায়ুর বেগ চেপে রেখে নামাজ পড়া কি জায়েজ, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, bangla news, bangladeshi news, today

আল্লাহতায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁর ইবাদতের জন্য। আর ইবাদতের শ্রেষ্ঠতম রূপ হলো নামাজ। নামাজ শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সামাজিক ও আধ্যাত্মিক জীবনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ অর্থাৎ, নামাজ ছাড়া ধর্মের ভিত্তি গড়ে ওঠে না।

রাসুল (সা.)-এর ভাষায়, ‘আমার চোখের স্নিগ্ধতা বা প্রশান্তি রয়েছে নামাজে।’ এ থেকেই বোঝা যায়, নামাজ শুধু শরিয়তের বিধান নয়, বরং তা একজন মুমিনের আত্মিক প্রশান্তির উৎস।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তুমি সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম কর এবং ফজরের নামাজ (কায়েম কর)। নিশ্চয়ই ফজরের নামাজে সমাবেশ ঘটে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : ৭৮)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলছেন,‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে’ (সুরা আনকাবুত : ৪৫)। অর্থাৎ, প্রকৃত নামাজি সব ধরনের অশ্লীলতা ও অনৈতিকতা থেকে নিজেকে দূরে রাখেন।

তাই পৃথিবীতে আল্লাহর দেওয়া বিধানগুলোর মধ্যে নামাজের মর্যাদা সবচেয়ে বেশি। আর নামাজের মর্যাদা যেমন বেশি, তেমনই নামাজি ব্যক্তির মর্যাদাও বেশি।

যারা নিয়মিত নামাজ পড়েন তাদের অনেকে অনেক সময় প্রস্রাব-পায়খানা বা বায়ুর চাপ রেখে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। অলসতা কিংবা ব্যস্ততার কারণে পুনরায় ওজু না পড়তেই এমনটা করে থাকেন তারা। তাই প্রশ্ন জাগে, শরিয়তের দৃষ্টিতে এমনটা করা জায়েজ কি না। চলুন তাহলে জেনে নিই বিস্তারিত—

হাদিসে পাকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করেছেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যখন নামাজে দাঁড়িয়ে যাও আর তোমাদের কারও প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেয়, সে যেন প্রথমে প্রয়োজন সেরে নেয়।’(তিরমিজি : ১৪২)

হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আর কেউ যেন প্রস্রাব-পায়খানার চাপ নিয়ে নামাজ না পড়ে।’(তিরমিজি : ৩৫৭)

হজরত নাফে রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, এক ব্যক্তি পেটে বায়ুর চাপ বোধ করে। তিনি বললেন, ‘বায়ুর চাপ বোধ করা অবস্থায় সে যেন নামাজ না পড়ে।’(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৮০২২)

এসব হাদিস ও আসারের ওপর ভিত্তি করে ইসলামী আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মত হলো, সাধারণত প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ পড়া মাকরুহ তাহরিমি। আর স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর নামাজের ভেতরে এমন চাপ সৃষ্টি হলে নামাজের পর্যাপ্ত ওয়াক্ত বাকি থাকা সত্ত্বেও এ অবস্থায় নামাজ চালিয়ে যাওয়া মাকরুহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে অজু-ইস্তিঞ্জা সেরে পূর্ণ চাপমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করা কর্তব্য। কেননা এতে নামাজের খুশু-খুজু বিঘ্নিত হয়। এক ধ্যানে নামাজ আদায় করা যায় না। প্রাকৃতিক এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ স্থিরতা ও একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা কর্তব্য।

তবে হ্যাঁ, নামাজের ওয়াক্ত যদি এত স্বল্প থাকে যে, প্রয়োজন সারতে গেলে নামাজের ওয়াক্ত থাকবে না বা নামাজ কাজা হয়ে যাবে, তাহলে সম্ভব হলে এ অবস্থায়ই নামাজ পড়ে নেবে। অবশ্য পর্যাপ্ত ওয়াক্ত থাকার পরও কোনো ইমাম বা একাকি নামাজ আদায়কারী যদি এ অবস্থায় নামাজ পড়ে নেয়, তবে এমনটি করা মাকরুহ হলেও তাদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.