পরিবারে লোকদের সালাম দেওয়া বরকতময় কাজ
মানবজীবনে সৌহার্দ্য, ভালোবাসা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রতিষ্ঠার অন্যতম সহজ ও সুন্দর মাধ্যম হলো সালাম। এটি শুধুই সম্ভাষণ নয়, বরং দোয়া, শান্তি ও কল্যাণের বার্তা। সালামের মাধ্যমে হৃদয়ের দূরত্ব কমে আসে, বন্ধন হয় দৃঢ়, সৃষ্টি হয় আন্তরিকতা ও ভ্রাতৃত্ব। তাই ইসলামে সালামকে ইমানের পরিপূর্ণতার শর্ত ও জান্নাতের পথে সহায়ক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ঘরে-বাইরে সর্বত্র সালাম প্রচলনের নির্দেশ এসেছে কোরআন-হাদিসে। বিশেষ করে পরিবারের সদস্যদের সালাম দেওয়া বরকতময় কাজ, যা ঘরের পরিবেশকে পরিণত করে শান্তি ও মমতার আবাসে।
একাধিক হাদিসের বর্ণনা থেকে সালামের গুরুত্ব ও তাৎপর্য উপলব্ধি করা যায়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ইমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ না তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা গড়ে উঠবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত ইমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদের এমন একটি কাজ বলে দেব না, যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালোবাসতে পারবে? (তা হচ্ছে) তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালাম প্রচার করো। (রিয়াজুস সালেহিন ৮৫২)
নিজ গৃহে প্রবেশ করে সালাম দেওয়ার গুরুত্ব অনেক। সালাম হলো একে অপরের জন্য আল্লাহর নিকট শান্তি ও নিরাপত্তার দোয়া করা। দিনে অগণিত চেনা-অচেনা মানুষকে সালাম দিলেও আমরা ঘরের মানুষকে সালাম দিতে লজ্জা বা সংকোচবোধ করি। অথচ মহান আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশ হলো, বাহির থেকে এসে ঘরে প্রবেশ করলে নিজ স্বজনদেরকেও সালাম দেওয়া। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম বলবে। এ হবে আল্লাহর নিকট হতে বরকতময় ও পবিত্র অভিবাদন।’ (সুরা নুর ৬১)
এক হাদিসে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, একদা আমাকে রাসুল (সা.) বললেন, হে বৎস! তোমার বাড়িতে যখন তুমি প্রবেশ করবে, তখন সালাম বলবে, তাহলে তোমার ও তোমার পরিবারের জন্য তা বরকতময় হবে।’ (রিয়াজুস সালেহিন ৮৬৬)
No comments