Adsterra

লোড হচ্ছে...

এক সচিবকে দুদকের মামলা থেকে বাঁচাতে দেড়শ কোটি টাকার চুক্তি

 

এক সচিবকে দুদকের মামলা থেকে বাঁচাতে দেড়শ কোটি টাকার চুক্তি, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, bangla news, bangladeshi new

‘রহস্যমানব’ এনায়েত করিম চৌধুরীকে গ্রেফতারের পর উঠে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।ঢাকায় তার অপরাধের একটা জাল ছিল।যোগাযোগ ছিল আমলা থেকে শুরু করে পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে।এক সচিবকে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা থেকে বাঁচাতে দেড়শ কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন এনায়েত।

গ্রেফতার এনায়েত করিম চৌধুরীকে গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

এদিকে, নিজেকে সিআইএ এজেন্ট দাবি করা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রহস্যময় মার্কিন নাগরিকের একজন বেতনভুক্ত সহযোগী গোলাম মোস্তফা আজাদকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে দুজন উপপুলিশ মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) সঙ্গে তাদের কার্যক্রমে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বিষয়টি। এছাড়া অন্তত দেড়শ কোটি টাকার বিনিময়ে একজন প্রভাবশালী সচিবকে দুদকের মামলা থেকে বাঁচাতে চুক্তি করা হয় এনায়েতের সঙ্গে। তার সঙ্গে বহু সরকারি কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের তথ্য উঠে এসেছে জিজ্ঞাসাবাদে। রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদে যুক্ত কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা আরও বলেন, এনায়েতের সঙ্গে একজন প্রভাবশালী আমলার গভীর যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। এই আমলার নামে দুদকের বেশ কিছু মামলা আছে। সেসব মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে নানা সময় তাদের কথাবার্তা, যোগাযোগ ও বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। মামলা থেকে বাঁচানো বা রক্ষা করার কথা বলে দেড়শ কোটি টাকার চুক্তি হয় তার সঙ্গে। তবে টাকা লেনদেনের কোনো প্রমাণ এখনো হাতে পাওয়া যায়নি।

এনায়েতের সহযোগী গ্রেফতার মোস্তফা আজাদ একাত্তর টিভিতে জিএম অপারেশন হিসাবে কাজ করতেন। ৫ আগস্টের পর তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে ইস্তফা নেন। তদন্ত কর্মকর্তা আক্তার মোর্শেদ বলেন, তাকে ২ লাখ টাকা বেতনে নিজের সহকারী হিসাবে রেখেছিলেন এনায়েত করিম। মোস্তফার মাধ্যমে এনায়েত তার টাকা বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতেন। গুলশানে যে বাড়িতে এনায়েতের থাকার কথা, সেই বাড়িতে থাকতেন মোস্তফা আজাদ। এই বাড়ি ভাড়ার জন্যও মাসে ২ লাখ টাকা দিতেন এনায়েত।

রাজধানীর মিন্টো রোডের মন্ত্রীপাড়ায় গাড়িতে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় শনিবার সকালে গ্রেফতার হন এনায়েত। বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতারের পর আদালতে তাকে ৪৮ ঘণ্টার রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাকে আবার আদালতে তোলা হয়। এরপর ফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের ইন্সপেক্টর আক্তার মোর্শেদের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারজানা হক রিমান্ডের আদেশ দেন। বুধবার এনায়েতের সঙ্গে আদালতে তোলা হয় বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া গোলাম মোস্তফা আজাদকেও। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, এনায়েত করিমকে মন্ত্রীপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে দুটি আইফোন জব্দ করা হয়। সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, ‘তিনি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসাবে কাজ করতে এসেছেন। ভারতকে নতুন সরকার গঠন করে দিতে প্রচেষ্টায় ছিলেন। এনায়েত করিম পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি বিদেশি সংস্থার এজেন্ট। গোলাম মোস্তফা তার পক্ষে কাজ করতেন। যারা সন্ত্রাসবাদ করে, নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মোস্তফার মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করে। বাইরের এজেন্টরা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, গ্রেফতারকৃতরা এসব জানতেন।

এনায়েতকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, এনায়েত বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের মিশন নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এসে ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থান করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে অবস্থান করতে থাকেন। ইতোমধ্যে তিনি সরকারি উচ্চ ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বর্তমান অবস্থান ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তথ্য সংগ্রহ করে তা তিনি তার নিয়ন্ত্রিত গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠাতেন।

No comments

Powered by Blogger.