স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে নেপাল
বিক্ষোভ, সহিংসতা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা পেরিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নেপাল কাঠমাণ্ডু উপত্যকা ও দেশের অন্যান্য অংশ থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক দিন পর কর্তৃপক্ষ গতকাল শনিবার এ কারফিউ তুলে নিল বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।নিবন্ধনহীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং গেড়ে বসা দুর্নীতির সংস্কৃতির অবসানের দাবিতে তরুণদের তুমুল বিক্ষোভ ও সহিংসতায় কেপি শর্মা অলি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেওয়ার পর দক্ষিণ এশীয় দেশটিতে কয়েক দিন ধরে যে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা চলছিল, শুক্রবার কার্কি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তার আপাত অবসান হয়েছে। শনিবার কোনো কারফিউ বা চলাফেরায় কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ নেই, বলেছেন নেপালি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র।তাঁর এ ঘোষণায় কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর দোকানপাট, সবজি বাজার ও শপিং মল খুলেছে, রাস্তায় ফের গাড়ির জট দেখা যাচ্ছে। দূরপাল্লার গাড়িও ছাড়ছে। একাধিক সরকারি ভবনসহ অনেক এলাকায় চলছে পরিচ্ছন্নতা অভিযান। সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভে উন্মত্ত আন্দোলনকারীদের দেওয়া আগুনে এসব ভবনের বেশির ভাগই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে সোমবার ‘জেন-জি’ গোষ্ঠীগুলোর ডাকা বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত সহিংসতায় গড়ায় এবং পুলিশের গুলিতে ১৯ জন নিহত হয়। সোমবার রাতেই সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া হাজারো বিক্ষোভকারী পরদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে পড়ার কিছুক্ষণ পর অলি পদত্যাগ করেন। নেপাল পুলিশের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যে সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ-সহিংসতায় এক ভারতীয় নাগরিকসহ অন্তত ৫১ জনের প্রাণ গেছে বলে জানানো হয়েছে।অলি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেওয়ার পর নেপালের সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দায়িত্বভার নেওয়ার পরপরই তারা কাঠমাণ্ডু উপকূল ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় কারফিউসহ নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করে। জনগণের চলাচলের সুযোগ সীমিত করে রাখে। নেপালকে রাজনৈতিক সংকট থেকে বের করে আনতে ও ছয় মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কার্কি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ওই বিধি-নিষেধের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়।
আরও পড়ুন কোথাও ছাত্রদল নেই : জাকসু
No comments