Adsterra

লোড হচ্ছে...

বাবা যেসব কাজ করলে সন্তান পরীক্ষায় ভালো ফল করে

 

বাবা যেসব কাজ করলে সন্তান পরীক্ষায় ভালো ফল করে,ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news,bangladesh

আপনার শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে ? তাহলে তার ভালো ফলের ক্ষেত্রে বাবা হিসেবে আপনার ভূমিকা অপরিসীম। আপনি যদি আপনার সন্তানের পড়া কিংবা আঁকার সময় সাহায্য করেন, সেটা আপনার সন্তানকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আবার ধরুন সন্তানের খেলার সঙ্গী হলেন আপনি, সেটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

ভাবছেন, কাজের ব্যস্ততায় সেই সময় আপনি পাচ্ছেন কই? সন্তানের ভালোর জন্য সময় আপনাকে বের করতেই হবে। কারণ, সম্প্রতি ইংল্যান্ডের লিডস ইউনিভার্সিটি একটি গবেষণা চালিয়ে দেখেছে, বাবারা যদি নিয়মিতভাবে সন্তানদের সঙ্গে পড়া, খেলা, গল্প বলা, আঁকা কিংবা গান গাওয়ার মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তোলেন, তাহলে তাঁদের সন্তানেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভালো ফল করে।

গবেষণায় যা জানা গেছে

মা-বাবার নিবিড় সান্নিধ্য পায়, এমন ৫ হাজার পরিবারের ৫৭ বছর বয়সী শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করেছিল ‘মিলেনিয়াম কোহর্ট স্টাডি’। এটি যুক্তরাজ্যে শিশুদের নিয়ে গবেষণার জন্য সুপরিচিত গবেষণা প্রকল্প। আর তাদের এই গবেষণায় অংশ নেওয়া শিশুদের জন্ম ছিল ২০০০ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে।

গবেষণার ফল অনুযায়ী, বাবারা যদি ৩ বছর বয়সী সন্তানের সঙ্গে আঁকা, খেলা ও পড়ার মতো কাজ করেন, তাহলে সন্তান ৫ বছর বয়সে স্কুলে ভালো করে। আবার ৫ বছর বয়সে বাবাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলে ৭ বছর বয়সী শিশুদের ‘কি স্টেজ অ্যাসেসমেন্ট’-এ ফল ভালো হয়।

গবেষণার প্রধান লিডস ইউনিভার্সিটি বিজনেস স্কুলের রিসার্চ ফেলো ড. হেলেন নরম্যান বলেন, ‘এখনো বেশির ভাগ শিশুর যত্ন মূলত মায়েরাই নেন। তবে বাবারা যদি সক্রিয়ভাবে শিশুর যত্নে অংশ নেন, তাহলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের ভালো ফলের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে।’

গবেষণা অনুসারে, বাবাদের অংশগ্রহণ শিশুদের স্কুলের সাফল্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, তা শিশুর লিঙ্গ, জাতিগত পরিচয়, শিক্ষাবর্ষে বয়স বা পরিবারের আয় যা-ই হোক না কেন।

মা ও বাবা একই কার্যক্রমে অংশ নিলে ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব দেখা যায়। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মায়েরা শিশুদের আবেগগত ও সামাজিক আচরণে বেশি প্রভাব ফেলেন, যেখানে বাবাদের প্রভাব শিক্ষাগত সাফল্যে বেশি।

গবেষকেরা পরামর্শ দেন, বাবারা যেন প্রতি সপ্তাহে যতটা সম্ভব সন্তানদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সময় কাটান। ব্যস্ত কর্মজীবী বাবারা দিনে মাত্র ১০ মিনিট সময় দিলেও সন্তানেরা শিক্ষাগত সুফল পেতে পারে।

গবেষকদের সুপারিশ

সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গবেষকেরা কিছু সুপারিশ করেছেন। তার একটি হলো, স্কুল ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা প্রতিটি শিশুর মা-বাবার যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহ করবেন (যদি সম্ভব হয়)। পাশাপাশি শিশুর কার্যক্রমে বাবাদের অংশগ্রহণ উৎসাহিত করতে কৌশল তৈরি করবেন।

গবেষকেরা এও বলেছেন, দ্য অফিস ফর দ্য স্ট্যান্ডার্ডস ইন এডুকেশনের (যুক্তরাজ্যের শিক্ষার মানদণ্ড দপ্তর) পক্ষ থেকে যখন স্কুল পরিদর্শনে যাওয়া হবে, তখন প্রতিষ্ঠানটি যেন বাবাদের অংশগ্রহণের বিষয়টিও বিবেচনা করে।

গবেষণার সহ-লেখক ছিলেন ফাদারহুড ইনস্টিটিউটের ইমপ্যাক্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশনসের প্রধান ড. জেরেমি ডেভিস। ফাদারহুড ইনস্টিটিউট যুক্তরাজ্যের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান। এটি এমন একটি সমাজ গঠনে কাজ করছে, যেখানে পুরুষদের সক্রিয় বাবা ও পরিচর্যাকারী হিসেবে মূল্যায়ন, তৈরি ও সহায়তা করা হয়।

জেরেমি ডেভিস যা বলেছেন তার সারমর্ম হলো, বিশ্লেষণ দেখিয়েছে, বাবারা তাঁদের সন্তানদের শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও সরাসরি প্রভাব ফেলেন। তাই মায়েদের মতো বাবারাও যেন সন্তানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে মেশেন বা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নেন, তার জন্য উপায় খুঁজে বের করে সহায়তা করতে হবে।

লিডস ইউনিভার্সিটি বিজনেস স্কুলের রিসার্চ ফেলো ড. হেলেন নরম্যানের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণাটি অর্থায়ন করেছে ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ কাউন্সিল (ইএসআরসি)। গবেষণার চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি লিডস ইউনিভার্সিটি বিজনেস স্কুলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.