Adsterra

লোড হচ্ছে...

ফাস্ট ফুড খান, গল্পটা জানেন তো ?

 

ফাস্ট ফুড খান, গল্পটা জানেন তো, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, bangla news, bangladeshi news, today update news

বার্গার, পিৎজা, চিকেন ফ্রাই; অর্থাৎ ফাস্ট ফুড নামে পরিচিত খাবারগুলো ছাড়া পৃথিবীর কথা চিন্তা করলে সবকিছু পানসে লাগতে থাকবে। তাই তো? অথচ এগুলোর বিরুদ্ধে সারাক্ষণ নানান কথা শুনতে হয় আমাদের। হ্যাঁ, পৃথিবীতে ফাস্ট ফুডের অস্তিত্বকে যেমন অস্বীকার করা যায় না, তেমনি এর নেতিবাচকতাকেও। এটাই বাস্তব আসলে। এটা সেই ‘জেনেশুনে বিষ পান’ করার মতো অবস্থা।

কিন্তু স্বীকার করতে হবে, ফাস্ট ফুড নামে পরিচিত খাবারগুলো তাদের ইতি ও নেতি—উভয় বাচকতা দিয়ে পৃথিবী জয় করেছে। হয়ে উঠেছে আধুনিক জীবনের সঙ্গী। তাই এর পেছনের গল্পগুলো এখনো আমাদের টানে। সেই গল্পই আজ।

জানেন কি, মিল্কশেক প্রথমে ছিল হুইস্কি আর ডিম দিয়ে তৈরি এক ‘স্বাস্থ্যকর পানীয়’! এরপর এক আমেরিকান তাতে ওয়ালগ্রিনস আইসক্রিম মেশানো শুরু করলেন। তারপর তৈরি হলো আজকের দারুণ সব শেক। আর আমরা তাতে মজে রইলাম। এদিকে অনিয়ন রিং মানে পেঁয়াজের আংটিও নতুন কোনো খাবার নয়। এর ধারণা পাওয়া যায় সেই ১৮ শতকে। বর্তমানের জনপ্রিয় আরেক খাবার টাকোজ কীভাবে এসেছে জানেন? এর ধারণা এসেছে মেক্সিকান খনিশ্রমিকদের খাবারের অভ্যাস থেকে। তাঁরা রুটির সঙ্গে মাংসের সহজ খাবার হিসেবে যা খেতেন, সেখানে থেকে টাকোজের আইডিয়া এসেছে; যা আজ হয়ে গেছে গ্লোবাল ট্রেন্ড।


বার্গারের জন্মগাথা

বনরুটির ভেতর এ এক আলাদা সাম্রাজ্য! সেই সাম্রাজ্যে থাকে মুরগি, গরু বা সবজির পেটি। থাকে হরেক রকম সস, ঝাল, পেঁয়াজ, লেটুসপাতা—আরও কত কী! কিন্তু আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমরা যে ধরনের বার্গার খাই, সেটা কি শুরু থেকে এমন ছিল? উত্তর হলো—না।

আজকের বার্গার আসলে অনেক যুগের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে এসেছে। কেউ বলে, মঙ্গল যোদ্ধারা ঘোড়ার নিচে রেখে মাংস নরম করত, সেটিই হয়েছে বার্গারের পেটি। কেউ আবার রোমানদের প্যাটির কথা বলেন। তবে ‘হ্যামবার্গ স্টেক’ নামে জার্মানরা যে মাংসের প্যাটি তৈরি করত, সেটিই আমেরিকায় এসে হয়ে ওঠে ‘হ্যাম বার্গার’। ১৯০০ সালে কানেটিকাটের এক ছোট্ট রেস্টুরেন্টের পাটক লুইস লাসেন নাকি প্রথমবার গ্রাউন্ড বিফের প্যাটিকে দুই টুকরো পাউরুটির মাঝে পুরে দিয়েছিলেন। সেই থেকে শুরু এর যাত্রা। বাকিটা তো ইতিহাসই!


ল্যাব থেকে প্লেটে চিকেন নাগেটস

চিকেন নাগেটস কিন্তু মোটেও প্রাচীন খাবার নয়। ১৯৬৩ সালে রবার্ট সি. বেকার নামে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক নিজের ল্যাবে তৈরি করেন মুরগির সোনালি টুকরাগুলো। এরপর আশির দশকে ম্যাকডোনাল্ডস একে বাজারে আনে। তখন থেকে চিকেন নাগেটস আমাদের হৃদয়ে রাজত্ব করে আসছে। সেই ল্যাবে তৈরি খাবারটি এখন পৃথিবীর যেকোনো দেশের গলিতেই পাওয়া যায়।


ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে কনি আইল্যান্ড পর্যন্ত

হট ডগ নিয়ে জার্মান ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে ‘কালচারাল’ বিতর্ক আছে। কেউ বলে ফ্রাঙ্কফুর্ট, কেউ বলে ভিয়েনা। মানে, এর জন্মভূমি। তবে আমেরিকায় এর যাত্রা শুরু হয় নিউইয়র্কে জার্মান অভিবাসীদের হাত ধরে। কনি আইল্যান্ডে চার্লস ফেল্টম্যান নামের এক ভদ্রলোক নাকি প্রথম হট ডগ বানের ভেতরে পুরে দেন! পরে সেই স্টলেই জন্ম নেয় বিখ্যাত নাথান’স হট ডগ!


ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ফরাসি, নাকি বেলজিয়ান

নাম ফ্রেঞ্চ হলেও ইতিহাস বলছে, বেলজিয়ামের দিকে জন্ম ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের। বেলজিয়ামের নামুর শহরে ঠান্ডায় নদী জমে গেলে মানুষ মাছের বদলে আলু ভেজে খাওয়া শুরু করে। সেখান থেকে জন্ম নেয় ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। তবে আমেরিকায় এই ফ্রাইয়ের খ্যাতি বাড়ে থমাস জেফারসনের হাত ধরে। তিনি ফ্রান্স থেকে ‘ফ্রেঞ্চ ফ্রাই’য়ের রেসিপি আমদানি করেন। ম্যাকডোনাল্ডস যখন ১৯৪৯ সালে তাদের মেনুতে এই খাবার অন্তর্ভুক্ত করে, তখন থেকে এটি ফাস্ট ফুডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে।


নেপলস থেকে নিউইয়র্কে পিৎজা

প্রাচীন রোমানরা পাউরুটির ওপর টপিং দিত। সেটাকেই কেউ কেউ পিৎজার প্রাথমিক উৎস বলে মনে করেন। তবে আধুনিক পিৎজার জন্ম আঠারো শতকে, ইতালির নেপলস শহরে। সেই দেশের রানি মার্গারিটার জন্য তৈরি হয় টমেটো, মোজারেলা আর তুলসীর এক বিশেষ পিৎজা। যেটি পরে ‘মার্গারিটা পিৎজা’ নামে বিখ্যাত হয়। ইতালিয়ান অভিবাসীরা পিৎজা নিয়ে যায় আমেরিকায়। নিউইয়র্কের লম্বার্ডি’স নামের রেস্টুরেন্ট প্রথম কমার্শিয়াল পিৎজা বিক্রি শুরু করে ১৯০৫ সালে।


মাঝখানে গর্ত, চারদিকে ভালোবাসা

ডোনাটের ইতিহাস শুরু নেদারল্যান্ডস থেকে, অয়েলি কেক নামে। পরে আমেরিকায় গিয়ে হ্যানসন গ্রেগরি নামের এক নাবিক তাঁর মায়ের তৈরি মিষ্টির মাঝখানে গর্ত করে দেয়। বলে, এভাবে ভালো ভাজা যাবে! ১৯২০ সালে নিউইয়র্কে অ্যাডলফ লেভিট প্রথম ডোনাট মেশিন তৈরি করলেন। ক্রিসপি ক্রিম আর ডাঙ্কিন ডোনাটসের যুগে তো আমরা সবাই জানি, ডোনাট মানে শুধু একটা মিষ্টি নয়, এটা অনুভূতি; যার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এক নাবিক ও তাঁর মায়ের গল্প।

No comments

Powered by Blogger.