Adsterra

লোড হচ্ছে...

আমেরিকায় মুসলিম কিশোরীর সংগ্রাম

আমেরিকায় মুসলিম কিশোরীর সংগ্রাম,ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh

একজন তরুণ মুসলিম হিসেবে আমেরিকায় আমি যেমন ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তেমনি কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতাও হয়েছে। আমি একটি বেসরকারি ইসলামিক স্কুলে পড়ি। তাই মুসলিম হওয়ার কারণে আমাকে খুব বেশি উপহাস বা হয়রানির শিকার হতে হয় না। তবে যখনই আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাদুঘর বা কোনো রেস্টুরেন্টে যায় তখন মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। কারণ আমরা সবাই হিজাব পরে আছি এবং শরীর আচ্ছাদিত রেখেছি, যা আমাদের স্কুল ইউনিফর্মের অংশ।

যখন আমরা কোনো রেস্টুরেন্টে ঢুকি তখন দেখা যায়, যারা অর্ডার দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল তারা আমাদের দেখে সেখান থেকে চলে যায়। অনেকে আমাদের নিয়ে কথা বলে, আঙুল তুলে দেখায়, যেন আমরা কোনো ভুল কাজ করছি। এ ধরনের আচরণ আমার সেই সহপাঠীদের মনে আঘাত করে, যারা স্কুলের বাইরেও হিজাব পরে। আর যারা হিজাব পরে না, তাদের হিজাব পরার আগ্রহও এতে কমে যায়।

ভ্রমণ শেষে যখন আমরা স্কুলে ফিরে আসি তখন বেশিরভাগ সহপাঠী বিরক্ত থাকে এই কারণে যে, বাইরে ঘুরতে গেলেও আমাদের হিজাব পরতে হয়। কারণ অন্যদের এমন বৈষম্যমূলক আচরণ মানসিকভাবে কষ্ট দেয়।

আমাদের শিক্ষক সবসময় বলেন, বাইরে গেলে আমাদের আচরণ যেন সবচেয়ে সুন্দর হয়। কারণ আমরা ইসলামকে প্রতিনিধিত্ব করছি। কিন্তু আমরা ভালো আচরণ করলেও মানুষের প্রতিক্রিয়া একই রকম থেকে যায়।

আমার মা হিজাব পরেন। তিনিও মাঝে মাঝে বিদ্বেষের শিকার হন। যখন তিনি মহাসড়কে গাড়ি চালান তখন তার মাথায় ওড়না থাকার কারণে লোকজন তার দিকে তাকিয়ে অশালীন ইঙ্গিত প্রদর্শন করে। যখন আমরা ঘরের বাইরে থাকি এবং জনসমক্ষে নামাজ পড়তে হয় তখন মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে এবং পাশের মানুষকে ফিসফিস করে কিছু বলে। এতে পরিবেশ অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর হয়ে ওঠে। আর আমার মনে হয় আমি নিরাপদ নই। এ কারণে কিছুদিন আমি জনসমক্ষে নামাজ পড়া একেবারে বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এ ধরনের ঘটনা শুধু আমাদের সঙ্গেই নয়, বরং আমার বন্ধুদের মায়ের সঙ্গেও ঘটেছে। মা আমাকে সবসময় বলেন, পৃথিবীতে ভালো মানুষও আছে, খারাপ মানুষও আছে। আমাদের দুই ধরনের মানুষের মুখোমুখি হতে হবে।

একদিন স্কুল শেষে দেখি মা খুব হাসিখুশি। আমি কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেদিন তিনি শরীরচর্চা কেন্দ্রে গেলে এক ভদ্রলোক তার কাছে এসে বলেন, আমেরিকা থেকে কখনো মুসলিমদের তাড়ানো যাবে না। ওই লোকটি আরও বলেন, তিনি কোরআন পড়েছেন শুধু এই জন্য যে, মুসলিমরা কারা এবং তারা কী বিশ্বাস করে, তা জানার জন্য। এই ঘটনা আমাদের জন্য ছিল অত্যন্ত হৃদয়ছোঁয়া, যা আমাকে নতুন করে আশা জুগিয়েছে।

আমেরিকান মুসলিম মেয়েদের অনেক সংগ্রাম রয়েছে। যদিও এগুলো আমাদের জন্য কষ্টকর। তবুও আমরা নিজেদের পরিচয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। আমি গর্বিত যে আমি আমেরিকার একজন মুসলিম।

No comments

Powered by Blogger.