Adsterra

লোড হচ্ছে...

ইরানকে সমর্থন করে কেন তোপের মুখে দক্ষিণ আফ্রিকার সেনাপ্রধান

ইরানকে সমর্থন করে কেন তোপের মুখে দক্ষিণ আফ্রিকার সেনাপ্রধান, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bang

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে সম্পর্ক কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে।  

রামাফোসার মুখপাত্র ভিনসেন্ট ম্যাগওয়েনিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'জেনারেলের ইরান সফরের সিদ্ধান্তটিই ভুল সময়ে নেয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে যখন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সংঘাত তুঙ্গে, তখন এই সফরটি মোটেই সঠিক ছিল না। জেনারেলের আরো সতর্ক থাকা উচিত ছিল।‘

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বাণিজ্য সম্পর্ক যখন অনেকটাই নাজুক, সে অবস্থায় দেশটির সেনাপ্রধান রুডজানি মাফওয়ানিয়ার ইরান সফর এবং তার বিতর্কিত মন্তব্য নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। সেখানে জেনারেল মাফওয়ানিয়া ইরানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার অভিন্ন সামরিক লক্ষ্য থাকার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ মন্তব্যের জেরে নিজ দেশে তিনি ব্যাপক সমালোচনার শিকার হচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থিতিশীল করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। এমন এক সময়ে মাফওয়ানিয়ার এই ধরনের মন্তব্য এল। গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ বাণিজ্য শুল্ক কার্যকর হয়েছে, যা দেশটির ব্যবসায়ীদের মধ্যে সৃষ্টি করেছে উদ্বেগ। এর আগে গত মে মাসে রামাফোসা হোয়াইট হাউসে একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে ট্রাম্পকে শান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস টিভি এবং তেহরান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার তেহরানে ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল সাইয়্যেদ আবদোলরহিম মুসাভির সঙ্গে বৈঠকে মাফওয়ানিয়া বলেন, দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। প্রেস টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কমান্ডার মাফওয়ানিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামে ইরানের ঐতিহাসিক সমর্থনের কথা স্মরণ করে বলেন, এই সম্পর্ক দুই দেশের মধ্যে একটি স্থায়ী বন্ধন তৈরি করেছে।‘

তেহরান টাইমস অনুসারে, জেনারেল মাফওয়ানিয়া আরো বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের লক্ষ্য অভিন্ন। আমরা সর্বদা বিশ্বের নিপীড়িত এবং অসহায় মানুষের পাশে আছি।

                        ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

এছাড়া, মাফওয়ানিয়া গাজায় খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়ানো বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের বোমা হামলা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে চলমান আগ্রাসনের নিন্দা করেছেন বলেও তেহরান টাইমস জানিয়েছে।

অন্যদিকে, জেনারেল মুসাভি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ‘জায়নবাদী শাসনের’ বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যার মামলার প্রশংসা করে বলেন, এই প্রচেষ্টা ইরানের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিরিল রামাফোসার কার্যালয় বৃহস্পতিবার দাবি করেছে যে, জেনারেল মাফওয়ানিয়ার ইরান সফর সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট অবগত ছিলেন না। যদিও এ ধরনের সফর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হয়, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে নয়।

রামাফোসার মুখপাত্র ভিনসেন্ট ম্যাগওয়েনিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'জেনারেলের ইরান সফরের সিদ্ধান্তটিই ভুল সময়ে নেয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে যখন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সংঘাত তুঙ্গে, তখন এই সফরটি মোটেই সঠিক ছিল না। জেনারেলের আরো সতর্ক থাকা উচিত ছিল।‘

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে সাজানোর একটি সূক্ষ্ম প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাণিজ্য সম্পর্ককে এমনভাবে ভারসাম্যপূর্ণ করা যাতে উভয় পক্ষই লাভবান হয়।‘

একইভাবে, দেশটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেনাপ্রধানের মন্তব্যের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোট সরকারের অন্যতম শরিক দল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর অসদাচরণ’ এবং ‘সেনাবাহিনীর আচরণবিধি লঙ্ঘনের’ অভিযোগে সামরিক আদালতে বিচার দাবি করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে সম্পর্ক কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। জুনে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল জোটের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধের পর এটি বিশেষভাবে সংবেদনশীল সময়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এপ্রিল মাসে তার বিস্তৃত বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার গাড়ি, মূল্যবান ধাতু এবং ওয়াইনের মতো পণ্যের একটি প্রধান গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।

ট্রাম্পের অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো— গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যা মামলা দায়ের করা। তিনি এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার অভিযোগও এনেছিলেন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক জ্যাকি সিলিয়ার্স দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রীয় টিভি এসএবিসিকে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জেনারেল মাফওয়ানিয়ার এই মন্তব্য ‘এর চেয়ে খারাপ সময়ে আর হতে পারত না’।

No comments

Powered by Blogger.