Adsterra

লোড হচ্ছে...

পাসওয়ার্ড কি সঙ্গীর সঙ্গে শেয়ার করা উচিত ? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

 

পাসওয়ার্ড কি সঙ্গীর সঙ্গে শেয়ার করা উচিত ? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা,ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, ba

প্রতিটি সম্পর্ক একটি ব্যক্তিগত রাজনৈতিক সমীকরণ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সমীকরণ বদলায়। তেমনই বদলাচ্ছে বর্তমান সময়ের প্রেম ও দাম্পত্যের ধারণা। ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত পরিসরের ধারণা আর আগের মতো নেই।

বিশেষত সম্পর্কের নিরিখে। তরুণ প্রজন্ম তো বটেই মধ্যবয়স্কদের দৈনন্দিন জীবনেও অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে স্মার্টফোন। পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও প্রধান মাধ্যম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ক্রমশই যেন যুগলদের পারস্পরিক বিশ্বাস ও স্বচ্ছতার অংশ হয়ে উঠছে ছোট এই যন্ত্র।

এই অবস্থায় একটি প্রসঙ্গ নিয়ে মাঝেমধ্যেই দুজনের মধ্যে তৈরি হয় বিতর্ক। সঙ্গীর ফোন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাসওয়ার্ড আদানপ্রদান করা উচিত কি না। এই প্রশ্ন বর্তমানে বহু সম্পর্কের ক্ষেত্রেই এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। একদিকে যেমন রয়েছে নিবিড়তার হাতছানি, তেমনই অন্যদিকে উঁকি দেয় ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের আশঙ্কা।

ইতিবাচক দিক

পাসওয়ার্ড বিনিময়ের পক্ষে প্রধান যুক্তি হিসেবে উঠে আসে পারস্পরিক স্বচ্ছতা ও গভীর আস্থার বিষয়টি। অনেক যুগলই মনে করেন, এই আদান-প্রদান সম্পর্কের বাঁধনকে আরো সুদৃঢ় করে এবং সঙ্গীর প্রতি পূর্ণ সমর্পণের মানসিকতাকে প্রতিফলিত করে। তাদের মতে, যখন কোনো লুকোচুরির অবকাশ থাকে না, তখন সন্দেহের কালো মেঘও জমতে পারে না।

আপৎকালীন পরিস্থিতিতে, যেমন কোনো দুর্ঘটনা বা আকস্মিক অসুস্থতার সময়ে, সঙ্গীর ফোনের নাগাল পাওয়া অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠতে পারে, যা পাসওয়ার্ড জানা থাকলে সহজেই সম্ভব হয়। ক্ষেত্রবিশেষে, পূর্বে বিশ্বাসভঙ্গের ঘটনার সম্মুখীন হওয়া কোনও ব্যক্তি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাময়িক মানসিক স্বস্তি পেতে পারেন বলেও অনেকে অভিমত প্রকাশ করেন।

নেতিবাচক প্রভাব

মুদ্রার অপর পিঠটিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষেত্রবিশেষে উদ্বেগজনক। মনোবিদ ও সমাজতাত্ত্বিকদের একটি বড় অংশ সঙ্গীর ফোনের পাসওয়ার্ড জানার বিষয়টিকে ব্যক্তিগত পরিসরে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ হিসেবেই গণ্য করেন। তাদের মতে, প্রতিটি মানুষেরই একটি নিজস্ব জগৎ বা ‘পার্সোনাল স্পেস’ থাকে, যেখানে তার ব্যক্তিগত কথোপকথন, নিজস্ব চিন্তাভাবনা, বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা কিংবা পেশাগত তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এই অলিখিত সীমারেখা অতিক্রম করলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

পাসওয়ার্ডের আদান-প্রদান অনেক সময় সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করে; সামান্য বিষয় নিয়েও ভুল বোঝাবুঝি এবং দাম্পত্যকলহের সূত্রপাত হতে পারে। একটি নিরীহ বার্তা বা ছবি ভুল ব্যাখ্যার শিকার হয়ে সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, ফোনের পাসওয়ার্ড চাওয়া যদি নিয়ন্ত্রণের মানসিকতা থেকে উদ্ভূত হয়, তবে তা সম্পর্কের স্বাস্থ্যকর বিকাশের পথে গুরুতর অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং ব্যক্তি-স্বাধীনতাকে মারাত্মকভাবে খর্ব করে। সঙ্গীর ফোন নিয়মিত ঘাঁটাঘাঁটি করার প্রবণতা অনেক ক্ষেত্রেই পারস্পরিক অবিশ্বাসেরই প্রতিফলন, যা কোনো সুস্থ সম্পর্কের লক্ষণ নয়।

সবমিলিয়ে সঙ্গীর ফোনের পাসওয়ার্ড আদান-প্রদান সম্পর্কের রসায়নে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা বহুলাংশে নির্ভর করে যুগলের পারস্পরিক বোঝাপড়া, সম্পর্কের পরিপক্বতা এবং স্বতন্ত্র মূল্যবোধের ওপর।


No comments

Powered by Blogger.