ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী যে ব্যায়ামের ধরনও পাল্টে যায়, জানেন ?
ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী শরীরচর্চার ধরন বেছে নিলে তা উপভোগ্য হয়ে ওঠে। খুব উৎসাহ নিয়ে শরীরচর্চা শুরু করেও অনেক সময় তা ধরে রাখাটা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ব্যস্ততা কিংবা আলস্য। শরীরচর্চাকে মনে হতে পারে বাড়তি বোঝা। অথচ ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী শরীরচর্চার ধরন বেছে নিলে তা উপভোগ্য হয়ে ওঠার কথা। তখন শরীরচর্চার অভ্যাস ধরে রাখাটা সহজ হয়। দীর্ঘ মেয়াদে সুফল মেলে। এমনটাই জানালেন ঢাকার ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফ হোসেন খান।
যাঁদের স্বভাব অন্তর্মুখী
অন্তর্মুখী মানুষ সহজে সবার সঙ্গে মিশতে পারেন না। জিমে বা পার্কে গিয়ে বহু মানুষের মধ্যে ব্যায়াম করাটাই তাঁদের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে পড়ে। অনেক মানুষের সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ ও খেলাধুলায় মত্ত হতে স্বচ্ছন্দ না–ই হতে পারেন তাঁরা। বরং নিভৃত স্থানে আলাদাভাবে ব্যায়াম করাটাই তাঁদের জন্য সুবিধাজনক কিংবা ভালো লাগতে পারে একলা পথে হাঁটা, জগিং বা দৌড়। সাধারণত অন্তর্মুখী স্বভাবের একজন মানুষ এমন ব্যায়াম করতে পছন্দ করেন, যাতে নির্দিষ্ট ধাপের পুনরাবৃত্তি থাকে। এমন কোনো মানুষের সঙ্গে ব্যায়াম করতেও তাঁর ভালো লাগতে পারে, যাঁর সঙ্গে তিনি সহজভাবে মিশতে পারেন।
যাঁদের স্বভাব বহির্মুখী
বহির্মুখী মানুষ আবার অন্যদের সঙ্গে সহজে মিশে যান। অনেক মানুষের সঙ্গে খেলাধুলা কিংবা জিমে ও পার্কে ব্যায়াম তাঁদের জন্য ভালো। একা ব্যায়াম করতে তাঁদের একঘেয়ে লাগতে পারে। বন্ধুদের সঙ্গে ব্যায়াম করতে পারেন তাঁরা। কিংবা ব্যায়াম করতে গিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন নতুন বন্ধু। বেশ ছোটাছুটি করতে হয়, এমন ব্যায়াম তাঁদের ভালো লাগে।
যদি থাকে দুশ্চিন্তা বা হতাশা
ব্যক্তিত্ব যেমনই হোক, মনের অবস্থাটাকে গুরুত্ব দেওয়াটাও জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগটা খুব আনন্দময় না–ও হতে পারে; বরং নিজের মতো করে নিজেকে সময় দেওয়াটা জরুরি হয়ে দাঁড়াতে পারে। মনকে প্রশান্ত করে, এ ধরনের ব্যায়াম এই সময়ের জন্য ভালো। তাহলে মানসিক অশান্তির এই দিনগুলোয়ও আপনি শরীরচর্চার অভ্যাস বজায় রাখতে পারবেন। আর তাতে মনও শান্তি পাবে। অবশ্যই মনে রাখবেন, হতাশা বা দুশ্চিন্তার মুহূর্তে যেকোনো ধরনের ব্যায়ামই মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ভালো না লাগলেও উদ্যোগী হয়ে ব্যায়াম শুরু করাটা জরুরি। যেটা ভালো লাগে, সেটা দিয়েই হোক শুরু।
শেষ কথা
কার ব্যক্তিত্ব ঠিক কোন ধরনের, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করাটা কঠিন। একই মানুষের মধ্যে অন্তর্মুখী ও বহির্মুখী স্বভাবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। তাই শরীরচর্চার ধরন বেছে নেওয়ার আগে নিজেকেই জিজ্ঞাসা করুন, কোথায় কীভাবে কোন ব্যায়াম করতে আপনার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতে পারে। সেভাবেই ব্যায়ামের চর্চা শুরু করুন। ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়ামের চর্চাও করতে পারেন। বৈচিত্র্য আনতে পারলে আগ্রহ ধরে রাখা সহজ হয়। কেউ হয়তো চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন। তিনি ব্যায়ামের সময় সঙ্গীদের মধ্যে কোনো একটা বিষয় নিয়ে চ্যালেঞ্জ নিতে পারেন। কেউ আবার নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জটাই গ্রহণ করতে পারেন। এভাবেও কিছুদিন পরপর বৈচিত্র্য ও আনন্দের সন্ধান পেতে পারেন। ব্যায়ামটাকে কেবল একটা ধরাবাঁধা কাজের তালিকায় না রেখে আনন্দময় কাজে পরিণত করতে পারাটাই এই সু–অভ্যাস ধরে রাখার মূল সূত্র। তাই নিজের ব্যক্তিত্ব ও মনের অবস্থা বুঝে ব্যায়ামের ধরন বেছে নেওয়া এতটা জরুরি।
No comments