বিচিত্রতায় ভরপুর আমেরিকার দেশ- ব্রাজিল
দেশটির বস্তিতে অনেক শিশু খালি পায়ে ফুটবল খেলে। এবং অনেকে ভালো খেলে নামিদামি ক্লাবে খেলার সুযোগ পায়। পেলে থেকে শুরু করে আজকের নেইমার, নামকরা সব ফুটবল খেলোয়াড়রা বস্ত থেকে উঠেছে। এবং আজ জাতীয় দলে খেলছে। ফুটবলের প্রতি তাদের আগ্রহ ও ভালোবাসা অন্যরকমের। এটাকে অনেকে বিনোদনের প্রধান অংশ হিসেবে ভাবে। ফুটবল তার একটি বড় কারণ। এভাবে হলুদ জার্সি সুনাম ছড়িয়েছে সারা বিশ্বে।
দক্ষিণ আমেরিকার অর্ধেক জুড়ে যে দেশটি দখল করে আছে সেটি ব্রাজিল। যারা একটু ভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি দেখতে চান, জানতে চান বিচিত্র কিছু, তাদের জন্য ব্রাজিল হতে পারে ভ্রমণের আদর্শ স্থান।
পাহাড়ের চূড়ায় ২৮ মিটার চওড়া দুহাত তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রকাণ্ড এক মানবভাস্কর্য। এটিই সেই বিখ্যাত ক্রাইস্ট দি রিডিমার।ভাস্কর্যটি দেখে মনে হবে যীশু রিও এই শহরকে আলিঙ্গন করছে। রিও ডি জেনিরোর তিজুকা ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত ৭০৯ মিটার দীর্ঘ ভাস্কর্যটি। ব্রাজিলের প্রতীকী চিহ্ন হয়ে ওঠা ক্রাইস্ট দি রিডিমার ব্রাজিলের অন্যতম শীর্ষ ভ্রমণ গন্তব্য।
আপনি যদি ব্রাজিলের কোন কার্নিভালে যান, তাহলে বুঝবেন রিও কার্নিভাল এর আয়োজনটা আসলে কত বড়। রোমাঞ্চকর বিষয় হল-বিভিন্ন রকমের সঙ্গীত সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী সাম্বা নাচ। কার্নিভালে আসা দর্শকদের আনন্দময় চিৎকার অপার্থিব মনে হবে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আঁধার সুগার লক অন্যতম পর্বতমালা। ঝলন্ত ক্যাবলে চড়ে পাখির চোখে রিও সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। রিও ডি জেনিরোর বৃত্তাকার শৈল চূড়াটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। সমুদ্র সৈকত থেকে এর উচ্চতা প্রায় ৩৯৪ মিটার। রিও শহর দেখার জন্য এবং সুগার লোফ ও মরো দা উরকার মধ্যে ঝুলন্ত ক্যাবল কার রাইডিংয়ের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার জন্য প্রতি বছর বহু দর্শনার্থী ছুটে যান সেখানে।
রিওর আরেকটি বিখ্যাত জায়গা হলো কোপাকাবানা। এখানে রয়েছে প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ সাদা বালির সৈকত। একপাশে থাকা ভবনগুলোর থেকে সৈকতকে আলাদা করেছে সাদা-কালো মোজাইকের দৃষ্টিনন্দন রাস্তা। এটি দেখলে পর্তুগালের লিসবন শহরের কথা মনে হতে বাধ্য।এছাড়া বিখ্যাত ইপামানা ব্রিজ ও এখানে অবস্থিত।
অ্যামাজনকে বলা হয় পৃথিবীর ফুসফুস। এটি ও পর্যটকদের জন্য অন্যতম দর্শনীয় স্থান। অ্যামাজনের ৬০ পার্সেন্ট রয়েছে ব্রাজিলে। এখানে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসে।
ইগুয়াজু জলপ্রপাত দেখতে হলে আপনাকে ব্রাজিলে যেতে হবে। এটি দেশটির অন্যতম দর্শনীয় স্থান।অর্ধ-বৃত্তাকারে নেমে আসা এসব জলপ্রপাতের শব্দ ও প্রাকৃতিক দৃশ্য মুগ্ধ হবেনই।
ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে- এই তিন দেশের সীমান্তের সংযোগস্থলে ২৪৭টি জলপ্রপাত বেয়ে পড়ছে ইগুয়াকু নদীর পানি। ইগুয়াজুর কিছু কিছু জলপ্রপাতের উচ্চতা ১০০ মিটার পর্যন্ত।
ব্রাজিলের সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ ফার্নান্দো ডি নরোনহা। দেশটির যে কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কোথায় যেতে চান, তাহলে নরোনহার নাম শোনার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। তীর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দ্বীপটিতে রয়েছে সামুদ্রিক জীববৈচিত্রের অনন্য সম্ভার। সাগরে ঝাপ দেওয়া, ডলফিন ও কচ্ছপ দেখার সুযোগ- এসবই মিলবে সুন্দর এই দ্বীপে।
যারা ব্রাজিলের প্রাণীবৈচিত্র্য দেখতে চান, তারা প্যান্টানালে যেতে চাইবেন। এছাড়া রয়েছে কিছু ন্যাশনাল পার্ক। এর মধ্যে লেনকয়েস মারানহেনসেস ন্যাশনাল পার্ক, ডায়মান্টিয়াল ন্যাশনাল পার্ক এর মধ্যে অন্যতম।
দক্ষিণ এশিয়ায় উচ্চমানের শিক্ষা বেশিরভাগ আওতার বাইরে। অথচ দেশের সার্বির উন্নতির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অত্যন্ত জরুরি। ব্রাজিলে শিক্ষার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এটি প্রথমে জেসুইট মিশনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল, যা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল। বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
ইউনিভার্সি অব সাও পাওলো, ইউনিভার্সিডেড ডি ব্রাসলিয়া,ইউনিভার্সি অব ফেডারেল ডো রিও গ্র্যান্ডে সুল, ইউনিভার্সি অব এস্টাডুয়াল ডি ক্যাম্পিনাস, ইউনিভার্সিডে এস্তেসিও ডি এস, ইউনিভার্সি অব ফেডারেল ডি সান্তা ক্যাটরিনা, ইউনিভার্সিডে এস্টাডুয়াল পাওলিস্তা, ইউনিভার্সিডে ফেডারেল ডি মিনাস গেরেইস ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো ব্রাজিলের শিষ্য রেংকে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।


No comments